সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা: একুশ শতকেও পণপ্রথার অভিশাপ। পণের দাবিতে গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ।
৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া বছর তেইশের বধূকে ভর্তি করা হয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে তপসিয়ার তিলজলা রোডে।
বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য বধূকে মারধর করতেন স্বামী। গতকাল গভীর রাতে, অশান্তি চরমে ওঠে। মারধরের পর, গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, বধূর বাপের বাড়ির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্ত স্বামীকে।
এই প্রথম নয়। বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রণপ্রথার বলি হতে হয়েছে কোনও না কোনও বধূকে। এর আগে, বরাহনগর থানার প্রাণকৃষ্ণ সাহা লেনে পণপ্রথার বলি হতে হয় ২৬ বছর বয়সী এক নারীকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বরাহনগরে পাঠবাড়ি লেনের বাসিন্দা তাপস কয়ালের মেয়ে বছর ২৬-এর প্রিয়াঙ্কা কয়ালের সাথে বিয়ে হয় বরাহনগর প্রাণকৃষ্ণ সাহা লেনের অর্পণ কুণ্ডুর সঙ্গে।
মৃতার বাবার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণ নিয়ে তার মেয়ের ওপর অত্যাচার করত শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। স্বামী, শ্বশুড়, শ্বাশুড়ি সকলেই তাঁর মেয়ের ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। তা সহ্য না করতে পেরে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করে।
তার আগে, গত মে মাসে একইদিনে রাজ্যের দুপ্রান্তে পণপ্রথার বলি হতে হয় বধূকে। একদিকে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে টাকার দাবিতে গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ ওঠে।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে আরও টাকা ও গাড়ির দাবিতে শুরু হয় নির্যাতন। মেয়ের অসুস্থতার কথা জেনে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মৃত্যু সংবাদ পান মৃতের পরিজনেরা।
অন্যদিকে, একই দিনে মালদায় পণের দাবিতে বিয়ের তিনমাসের মধ্যে স্ত্রীকে গলা কেটে খুনের অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। বাড়ি থেকে উদ্ধার দেহ।
মৃতার পরিবারের জানায়, তিনমাস আগে দিনমজুর রুকসাদ আলির সঙ্গে বিয়ে হয় রূপালির। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিচ্ছিলেন স্বামী। এনিয়ে বিবাদ চরমে ওঠায় ওই গৃহবধূকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।