কলকাতা : করোনা না কি স্ক্রাব টাইফাস? নাকি ইনফ্লুয়েঞ্জা? উপসর্গ দেখে বোঝার উপায়ই নেই কী ধরনের জ্বর। আর তাতেই বাড়ছে জটিলতা, বিভ্রান্তি। শিশুদের মধ্যে হু হু করে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। চিকিৎসকরা বলছেন, এটি মূলত একধরনের ফ্লু। যা ফুসফুসকে সংক্রমিত করছে। হচ্ছে নিউমোনিয়া। বাড়ছে এমসেফ্যালোপ্যাথি। অর্থাৎ সংক্রমণ মাথায় চলে যাচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ভয়াবহ।
করোনা মহামারীর মধ্যেই বাড়ছে জ্বরের আতঙ্ক। সূত্রের দাবি, মাত্র ৩দিনেই প্রাণ হারিয়েছে ৬ শিশু। কেউ সদ্য একমাস পৃথিবীর আলো দেখেছিল। কেউ বা পাঁচ মাস। তারই মধ্যে জ্বর কেড়ে নিল প্রাণ। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, থেকে কলকাতা, জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে! চারদিকে আতঙ্ক-উদ্বেগ। হাসপাতালে উপচে পড়ছে ভিড়! শিশুদের মধ্যে এই জ্বর থাবা বসিয়েছে পশ্চিমেও। পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানেও আতঙ্ক বাড়াচ্ছে জ্বর।
আরও পড়ুন:
রাজ্যে করোনা সংক্রমণে শীর্ষে কলকাতা, ১ দিনে সংক্রমিত ১৩৪ জন
আক্রান্ত শিশুদের পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ভয়ঙ্কর। চিকিৎসকরা তাই বারবার বলছেন, জ্বর হলে ফেলে না রেখে, দ্রুত শিশুকে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যেতে। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ-এর পিআইসিইউ ইনচার্জ প্রভাসপ্রসূণ গিরি জানালেন, ' জ্বর অনেকের হচ্ছে। মুশকিল হল, এই জ্বরের উপসর্গ একেবারে করোনার মতো। বাবা- মায়েরা বুঝে উঠতে পারছেন না। স্ক্রাব টাইফাস, ইনফ্লুয়েঞজা, সব ক্ষেত্রেই এক উপসর্গ। তাই চিকিত্সা শুরুতে দেরি হচ্ছে। এর ফলেই বাড়ছে সমস্যা'
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কৌশিক চৌধুরী জানালেন, এই জ্বর ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই। কিন্তু একটুও দেরি করা চলবে না। চিকিত্সকের কাছে নিয়ে আসতে হবে দ্রুত।
উপসর্গ
- জ্বর
- শুকনো কাশি
- সঙ্গে শ্বাসকষ্ট
কোভিড কালে শিশুদের এই জ্বর নিয়ে চিন্তিত এবং সতর্ক স্বাস্থ্য ভবনও। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে স্বাস্থ্য ভবন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে,
মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জা A, B ও RS ভাইরাসের জেরেই শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, অজানা জ্বর নয়। সার্স বা ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ও আরএস ভাইরাস।
জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের ওখানে, ভর্তি থাকা, ১০ জন শিশুর সোয়াব টেস্ট করা হয়। ৪ জনের শরীরে মিলেছে ইনফ্লুয়েঞ্জা B ও ৩ জনের ক্ষেত্রে RS Virus।
ইনফ্লুয়েঞ্জা যেহেতু ছোঁয়াচে, তাই জ্বরে আক্রান্তদের জন্য পৃথক ওয়ার্ড ও পেডিয়াট্রিকে বেড বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।