ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: ৮ ঘণ্টা পর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার। জরুরি বিভাগে চালু হয়েছে স্বাভাবিক পরিষেবা। ফলে স্বস্তিতে রোগী ও পরিজনরা।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাতে। অভিযোগ, দ্রুত চিকিৎসা শুরুর দাবিতে দুই জুনিয়র চিকিৎসককে নিগ্রহ করেন এক রোগীর আত্মীয়া। তিনি নিরাপত্তারক্ষীদেরও ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে রাত ১১টা নাগাদ কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। জরুরি বিভাগের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে লাগানো হয় পোস্টার। সকালে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করে বৌবাজার থানার পুলিশ। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একমাসের মধ্যে সুরক্ষা পরিকাঠামো তৈরির আশ্বাস দেওয়ায় সকাল সাতটা নাগাদ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন জুনিয়র চিকিত্সকরা।
অন্যদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে হাসপাতালের জরুরি পরিষেবা দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েন অন্য রোগীরা। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
কিছুদিন আগে পড়ুয়াদের টানা আন্দোলনে অচলাবস্থা তৈরি হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। অধ্যক্ষের পদত্যাগ সহ একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে অনশন-আন্দোলন শুরু করেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পড়ুয়াদের একাংশ। এই আন্দোলন নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ হাসপাতাল কর্তপক্ষকে নির্দেশ দেয়, আরজি কর হাসপাতালে আন্দোলনে যে বা যাঁরা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছেন, নির্দিষ্টভাবে তাঁদের নাম জানাতে হবে। যাতে নির্দেশ অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে নাম জানাতে হবে হাসপাতাল কর্তপক্ষকে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর আদালত নির্দেশ দেয়, রোগী পরিষেবা ব্যাহত না করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে হবে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে ফল ভুগতে হবে আন্দোলনকারীদের। রোগীদের স্বার্থ যেন কোনওভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয়, একথা ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের মনে রাখতে হবে।