সৌমিক মজুমদার, কলকাতা: গরুপাচার মামলার তদন্তে রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। বাংলার হেভিওয়েট নেতাদের হাজিরা দিতে হয়েছে তাদের সামনে। সেই নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই এ বার ওই মামলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) নামে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court)। সীমান্ত দিয়ে অবাধে গরু পাচারের ঘটনায় (Cattle Smuggling) কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের করা হয়েছে মামলাটি। 


শাহের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে


কেন্দ্রীয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শাহের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন রমাপ্রসাদ সরকার নামের এক আইনজীবী। তাঁর প্রশ্ন, "রাজ্যের সমস্ত সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে রমরমিয়ে চলছে গরু পাচার। সীমান্তে পাহারায় মোতায়েন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে গরু পাচার করা সম্ভব?" চলতি সপ্তাহেই  প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আদালতে রমাপ্রসাদ যে যুক্তি দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনেই রয়েছে বিএসএফ। তার পরেও কী ভাবে নজর এড়িয়ে যাচ্ছে তাদের! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনেই যেহেতু বিজেপি, সে ক্ষেত্রে শাহ তাঁর দায় এড়াতে পারেন না। এ বিষয়ে যা পদক্ষেপ করার তাঁকেই করতে হবে, এত দিন কেনই বা কোনও পদক্ষেপ করলেন না, এমন প্রশ্নও তোলা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতের তরফে শাহকে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: মমতার পরামর্শে পকোড়ি খাওয়া ছাড়লেন ঝালদার চেয়ারম্যান, ভুঁড়ি কমাতে চলছে প্রাণায়াম


উল্লেখ্য, গরুপাচার মামলায় এ যাবৎ বিএসএফ-এর ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন  বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার। পাচারকারীদের সঙ্গে ষড় করে তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বাগিয়েছেন বলে অভিযোগ। শুধু নিজের নামেই নয়, স্ত্রী এবং শ্বশুরের নামেও তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি হস্তান্তর করেন বলে উঠে এসেছে তদন্তে।


গরুপাচারে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন


এই গরু পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হক। দিল্লি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সীমান্ত বাহিনীর কমান্ডারকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। সতীশ জিজ্ঞাসাবাদ করেই এলামুলের নাম জানতে পারে সিবিআই। এ ছাড়াও একসময় তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত থাকা বিনয় মিশ্র, তাঁর ভাই বিকাশ মিশ্রের নামও উঠে এসেছে তদন্তে। গরুপাচার করে আয় করা কোটি কোটি টাকা তাঁরা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও এ নিয়ে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাক পড়েছিল তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেবেরও।