ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: টোকিওর জন্য তখন কঠোর প্রস্তুতি। পাখির চোখ তখন অলিম্পিক্স পদকে। টোকিওর পোডিয়ামের পথে তখন নিরন্তর লড়াই চলছে অসমের মেয়ের। লভলিনা বড়গোঁহাই। বাড়িতে তখন একটা কঠিন অসুখের সঙ্গে লড়ছেন তাঁর মা মামনি বড়গোঁহাই। ১৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতার আর এন টেগোর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন হয় মামনির। আর কয়েক মাস পরেই যে টোকিওর পোডিয়ামে ধূমকেতুর মত উত্থান হবে তাঁর মেয়ের, তা কে জানত? অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ের পর মঙ্গলবারই কলকাতায় পা রাখলেন অসমের লড়াকু বক্সার। রুটিন চেক-আপের জন্য মা-কে নিয়ে হাসপাতালে আসেন লভলিনা। অলিম্পিক্সের প্রস্তুতি চলছিল। তাই, মায়ের অসুস্থতার সময় কাছে থাকতে পারেননি, জানালেন তিনি।
অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী লভলিনা বড়গোঁহাই বলেন, ‘অলিম্পিক্সের প্রস্তুতি চলছিল, তখন মায়ের পাশে থাকতে পারিনি। ওটা নিয়ে খুবই স্ট্রেস হয়। অপারেশনের প্রস্তুতি চলছিল। বিশ্বাস ছিল সব ভালই হবে।’ টোকিওর মন জিতে ফেরার পর এখন কিছু দিনের বিশ্রাম। এরপরই নেমে পড়বেন প্রস্তুতিতে। সামনে অনেক লড়াই। প্যারিস অলিম্পিক্সে সোনা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না। লভলিনা বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই প্র্যাক্টিসে নামব। অলিম্পপিক্সে সোনা চাই। তার আগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান গেমসেরও প্রস্তুতি নিতে চাই।’ অলিম্পিক্স মেয়ের পদকজয়ে গর্বিত মা। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। রিভিউয়ের রিপোর্ট সন্তোষজনক। তাঁর চিকিৎসক দীপক শঙ্কর রায় জানান, ‘রিভিউয়ের রিপোর্ট সন্তোষজনক। ভর্তির সময় জানতাম না ও অলিম্পিক্সে যাচ্ছে, মেডেল জেতার পর জানতে পারি।’
টোকিওতে অলিম্পিক্সের মঞ্চে প্রথমবারের জন্য নেমেছিলেন লভলিনা। আর প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন। ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। তিনি হেরে যান তুরস্কের প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে। ৬৪-৬৯ কেজি মহিলাদের বিভাগে বিশ্বের ১ নম্বর বুসেনাজ সুরমেনলির বিরুদ্ধে হার মানতে হয় লভলিনাকে। বেশ কয়েকবার ভাল পাঞ্চ করলেও অভিজ্ঞতাতেই মূলত বাজিমাত করেন তরুস্কের বক্সার। দ্বিতীয় রাউন্ডে একটা সময় তুরস্কের বক্সারের থেকেও ভাল পারফর্ম চোখে পড়ছিল লভলিনার। কিন্তু পুরো ম্যাচ জুড়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে জয় হাসিল করে নেন বুসেনাজ সুরমেনলি।