সঞ্চয়ন মিত্র, সন্দীপ সরকার ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: অক্টোবরে দুর্গাপুজো। ক্যালেন্ডার বলছে, হাতে রয়েছে আর মাত্র ৪৮ দিন। জেলা থেকে শহর সর্বত্র বাঙালির সবথেকে বড় উত্সবের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এবারেও ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে মারণ ভাইরাস। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা অক্টোবরেই অর্থাৎ পুজোর মাসেই শিখর ছুঁতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ (Corona third wave)। এহেন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই আরও বেশি সতর্ক হচ্ছে পুজো কমিটিগুলি।
২০২০ সালে প্রশাসনিকভাবে যেসব বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, সেগুলিকে সামনে রেখেই প্রস্তুতি শুরু করছে পুজো কমিটিগুলো। যেমন, মধ্য কলকাতার কলেজ স্কোয়ার সর্বজনীন। এখানকার পুজো মানেই ঐতিহ্যের সঙ্গে সাবেকিয়ানার মেলবন্ধন। সেইসঙ্গে নজরকাড়া আলোর রোশনাই তো আছেই। এবছর সেখানকার উদ্যোক্তারা খোলা মণ্ডপ বানানোর পরিকল্পনা করেছেন। যাতে, কলেজ স্কোয়ারের অন্যপ্রান্ত থেকেও প্রতিমা দর্শন করা যায়। কলেজ স্কোয়ার সর্বজনীনের চিফ অর্গানাইজার বিকাশ মজুমদারের কথায়, 'আমরা ইতিমধ্যেই পাড়ার লোকজনেদের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের ভ্যাকসিনেটেড করে নিয়েছি। এবারেও সংযতভাবে পুজো করলে সংক্রমণ বাড়বে না।'
সংক্রমণ রুখতে সতর্ক দক্ষিণ কলকাতার শিবমন্দিরও। নতুন নতুন থিমে প্রত্যেক বছরই দর্শকদের নজর কাড়ে এই পুজো। এই বছর তাঁরাও টিকাকরণেই বেশি জোর দিয়েছেন। সেখানকার উদ্যোক্তা পার্থ ঘোষের মতে আরও বেশি সতর্ক হয়ে কাজ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই, ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের তরফেও কমিটিগুলোকে বেশ কিছু গাইডলাইন দেওয়া হয়েছ। যেমন, যথাসম্ভব খোলামেলা মণ্ডপ করতে হবে। প্যান্ডেলের প্রবেশপথ ব্যারিকেড দিয়ে যথাসম্ভব দীর্ঘ করতে হবে, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে। ঠাকুরের ভোগে কাটা ফল দেওয়া যাবে না। পুষ্পাঞ্জলি ও সন্ধিপুজোর মতো অনুষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ভিড় নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
কী বলছেন চিকিৎসকেরা? (What are the doctors saying?)
চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের কথায়, 'থার্ড ওয়েভ কখন আসবে, কবে আসবে আগে থেকে বলা যায় না। সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। যে পরিকাঠামো দরকার, তৃতীয় ঢেউ এসে গেলে সংক্রমণের গ্রাফ ওপর দিকে ওঠারই সম্ভাবনা বেশি। আবার এমনও হতে পারে পিক উঠল না। তৃতীয় সম্ভাবনা, পিক খুব অল্প উঠে নেমে যাবে।'
চিকিত্সক যোগীরাজ রায় জানাচ্ছেন, 'গত বছরের মতো, এবারও সংযম দেখাতে হবে। শুধু পুজোটাই হোক, এবারও হাসিখুশি তোলা থাক।'
কবে দূর হবে কোভিড-আতঙ্ক? আবার কবে ফিরে আসবে উৎসবের চেনা মেজাজ? সেই মণ্ডপে আড্ডা, একসঙ্গে ভোগ খাওয়া, লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা। এখন সেই অপেক্ষায় প্রত্যেক বাঙালি।