কলকাতা: ইলিশের জোগান অন্যবারের তুলনায় কম। পাশাপাশি, বাঙালির পাত থেকে এবার উধাও হতে চলেছে রকমারি মাছও। কারণ বাজারে ইলিশের সঙ্গে অন্য মাছেরও জোগান কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বর্ষার মরশুমেও মাছের বাজারে আগুন। কলকাতার সমস্ত বাজারেই মাছ কিনতে গিয়ে পকেটে টান পড়ছে মধ্যবিত্তের। মাছ ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্ষায় এবার দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভেসে গিয়েছে ভেড়ি, পুকুর-বিল। তার জেরেই মাছের জোগান কমেছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।


১৮ জুলাই নাগাদ ডায়মন্ড হারবারে পৌঁছেছিল ইলিশ। প্রায় ৬ হাজার কেজি ইলিশ নিয়ে গতকাল নামখানা ঘাটে পৌঁছয় ১০-১২টা ট্রলার। বর্ষার মরশুমে এই প্রথম এত ইলিশ আসায় খুশি হন আড়তদার থেকে শুরু করে মৎস্যজীবীরা। বাজারে জোগান বাড়লে ইলিশের দাম কমবে বলেও আশা করেছিলেন ক্রেতারা।



ঠিক একমাস আগে বঙ্গে বর্ষার আগমন হয়েছে। মাঝেমধ্যে দু এক পশলা বৃষ্টি অথবা টানা বর্ষণ। তাতে মন ভরলেও পাতে নেই রুপোলি শস্য। আর তাই মুখ ভার বাঙালির। খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা দিয়ে রসনাতৃপ্তির সুযোগ এখনও সেভাবে হল কই? অথচ আষাঢ় শ্রাবণ পেরিয়ে  ভাদ্র মাস পড়ল। নামেই বর্ষাকাল ছিল। বঙ্গোপসাগরের ইলিশের প্রায় দেখা ছিল না। গভীর সমুদ্র থেকে পাঁচ মিশালী মাছের সঙ্গে যেটুকু ইলিশ বাজারে আসছিল, তার দামও ছিল আকাশ ছোঁয়া। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে দেদার বিকোচ্ছে খোকা ইলিশ। সেই দুঃখ খানিকটা হলেও মিটতে চলেছে ইলিশ প্রিয় বাঙালির।  


১৭ জুলাই রাতে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্র বাজারের বেশ কিছু আড়তে প্রায় ৬ হাজার কেজির বেশি ইলিশ ঢোকে। গভীর সমুদ্র থেকে ১০-১২টি ট্রলার ইলিশ নিয়ে নামখানা ঘাটে ফেরে। প্রত্যেকটি ট্রলার কম বেশি প্রায় ৪০০ কেজি করে ইলিশ ধরে নিয়ে আসে। মরশুমে এই প্রথম একসঙ্গে এত ইলিশ আসায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পান আড়তদার থেকে মৎস্যজীবীরা। এ দিন এই পাইকারী বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ইলিশের কেজি প্রতি দাম গিয়েছে আটশো থেকে সাড়ে আটশো টাকার মধ্যে। আর ৮০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের মাছ এক হাজার টাকা। এদিকে  ১ কেজি ওজনের কেজি প্রতি ইলিশের দাম ছিল তেরোশো টাকার মধ্যে। মরশুমের শুরু থেকে এবার মৎস্যজীবীদের জালে পর্যাপ্ত সমুদ্রের ইলিশ ধরা পড়েনি।