পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: কলকাতার ম্যারেজ পার্টির সঞ্চালিকাকে গণধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল পটনার হোটেলে। যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও, এখনও অভিযুক্তরা অধরা বলে অভিযোগ নির্যাতিতার।
ইভেন্টে সঞ্চালিকার কাজ করেন কলকাতার বাসিন্দা এই তরুণী। তাঁর অভিযোগ, গত জুলাইয়ে বিহারের পটনায় এক হোটেলে গণধর্ষণের শিকার হন তিনি। পটনার গাঁধী ময়দান থানায় এফআইআর-ও দায়ের হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা এখনও গ্রেফতার হয়নি।
তরুণীর দাবি, তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার জন্য বিহারের পটনায় গিয়েছিলেন। অন্যান্যবার তাঁর স্বামী সঙ্গে থাকলেও এবার ছিলেন না। তরুণীর অভিযোগ, গত ৩ জুলাই হোটেলের ঘরে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার মালিক ও আরও একজন তাঁকে গণধর্ষণ করে।
তরুণী জানান, পটনায় যাওয়ার পর গত ৩০ জুন মুঝফফরপুরে একটি ইভেন্টে অংশ নেন। তারপর সেই বিয়েরই অন্য ইভেন্টের জন্য ১ ও ২ জুলাই পটনায় ছিলেন। একটি বড় হোটেলে ছিলেন তিনি।
তরুণীর অভিযোগ, গত ২ জুলাই, হোটেলের ঘরে তাঁকে যারা নিয়ে গিয়েছিল, সেই সংস্থার মালিক ও আরও একজন তাঁকে গণধর্ষণ করে।
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, রাত ১টায় সংস্থার মালিক হর্ষ রঞ্জন ও বিক্রান্ত কেজরিওয়াল তাঁর ঘরে ঢোকে। নির্যাতিতা জানান, হর্ষ রঞ্জন বলেছিল, পেমেন্ট করার জন্য আসছি।
তরুণী জানান, ঘরে ঢুকে ব্যাগ থেকে মদের বোতল বের করে খেতে শুরু করে দুজন। তিনি প্রতিবাদ জানানোয় তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়।
নির্যাতিতা বলেন, দুজনে মিলে আমাকে গণধর্ষণ করে। কাউকে জানালে প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমাকে ওয়াশরুমে জলে ফেলে দেয়, প্রমাণ লোপাটের জন্য। কাউকে বললে খুনের হুমকি দেয়। তারপর গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ায়।
তরুণী জানান, এরপর তাঁকে পটনা স্টেশনে নিয়ে গিয়ে ট্রেনে তুলে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। নির্যাতিতা জানান, ৩ জুলাই তিনি বাড়িতে ফেরেন। পরের দিন তিনি যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি বলেন, মেডিক্যাল পরীক্ষা করে পটনা পুলিশকে অভিযোগটি জানানো হয়। এরপর, জিরো এফআইআর দায়ের করে পটনা পুলিশকে জানায় যাদবপুর থানা।
পটনার গাঁধী ময়দান পুলিশ থানায় গণধর্ষণ ও হুমকির অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু এতদিনেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। গাঁধী ময়দান পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা পলাতক। হোটেল কর্মীদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারিণীর বয়ান নেওয়া হয়েছে। আদালত থেকে গ্রেফতারি পরিয়োনা জারি হয়েছে।
এদিকে, এক অভিযুক্তের স্ত্রী দাবি করেন, তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি বলেন, আমার বরকে ব্ল্যাকমেল করছিল। টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ করেছে। বর তো কোথাও পালায়নি। আমার সঙ্গেই আছে। পুলিশ তো নিয়মিত যোগাযোগ করছে।
আরও পড়ুন: জয়পুরে খাবারের টোপ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে মহিলাকে ধর্ষণ, গ্রেফতার দুই চালক
আরও পড়ুন: 'মেয়েরা রাতে বাইরে ঘুরবে কেন'? মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নে বিতর্ক বাড়তেই ফের ধর্ষণ গোয়াতে