কলকাতা : জটিল ধাঁধার সমাধানের রাস্তা বের করে জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত কলকাতা পুলিশের তিন সাব-ইন্সপেক্টর। তিন মামলায় উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য সাব-ইন্সপেক্টর কৌশিকব্রত মজুমদার, সুমন সাধুখাঁ এবং জিতেন্দ্র প্রসাদ পাচ্ছেন এবারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফে তদন্তে শ্রেষ্ঠত্বের পদক অথবা 'Union Home Minister’s Medal for Excellence in Investigation for 2021'। গড়িয়াহাটের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা ও এটিএমে স্কিমিং ডিভাইস প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করেছিলেন কলকাতার পুলিশের এই তিন সাব-ইন্সপেক্টর। সহকর্মীদের জাতীয় স্তরে সাফল্য কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে।


ঠিক কী তদন্তের জেরে তাদের পুরস্কার-


সাব-ইন্সপেক্টর কৌশিকব্রত মজুমদার : ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সাড়া ফেলে দেওয়া গড়িয়াহাটে বৃদ্ধা খুনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কিনারা করেছিলেন। লাশ আবিষ্কার হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেফতার হয়েছিল তিন অভিযুক্ত। নৃশংস ভাবে নিজের পুত্রবধূ এবং নাতনির হাতে খুন হয়েছিলেন ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধা। মৃতদেহের ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল মাথা, সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের দাগ। ঘটনায় জড়িত পুত্রবধূর প্রেমিকও। আপাতত অতি যত্নে সংগৃহিত বিভিন্ন ধরনের প্রমাণের ভিত্তিতে গঠিত মজবুত চার্জশিট, বর্তমানে বিচারাধীন মামলা।


সাব-ইন্সপেক্টর সুমন সাধুখাঁ : 'Team Viewer' নামক একটি অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে তার মাধ্যমে কার্ড সংক্রান্ত তথ্য জাল করে এটিএম থেকে গায়েব হচ্ছিল ব্যাঙ্ক গ্রাহকের টাকা। সেই টাকা জমা পড়ে দুটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। ওই দুই ব্যাঙ্কের এটিএম-এর সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে গ্রেফতার করা হয় অরুণ শ নামক এক ব্যক্তিকে, যে টাকা তুলে তা হস্তান্তর করে গৌরব সাধওয়ানি নামের আর এক অভিযুক্তকে। সাধওয়ানির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় মোট ৬ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। যথাসময়ে জমা পড়েছে চার্জশিট, বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে মামলা। 



সাব-ইন্সপেক্টর জিতেন্দ্র প্রসাদ : ব্রেবোর্ন রোডে অবস্থিত একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম-এ 'স্কিমিং ডিভাইস' বসিয়ে বেআইনিভাবে সংগ্রহ করা হয় অসংখ্য এটিএম কার্ডের তথ্য। অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা তুলে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এই জালিয়াতি ব্যাঙ্কের নজরে পড়ায় অভিযোগ দায়ের হয় আমাদের কাছে। এটিএম-এর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারী দল বুঝতে পারে, এই ঘটনার জন্য দায়ী দুই বিদেশি নাগরিক। ওই এটিএম এবং তার সংলগ্ন এলাকায় নজরদারির ফলে গ্রেফতার হয় রোমানিয়ার এক নাগরিক, যার ঠিকানা যোধপুর পার্কের একটি গেস্ট হাউজ। নিরলস তদন্তের ফলে সন্ধান মেলে আরও দুই রোমানিয়ানের, যাদের গ্রেফতার করা হয় দিল্লি থেকে। বিচারে ওই তিনজনের ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন মহামান্য আদালত, এবং কারাবাস শেষে দেশ থেকে বিতাড়িত করার নির্দেশ।