পার্থপ্রতিম ঘোষ, সমিত সেনগুপ্ত ও রঞ্জিৎ সাউ, কলকাতা: কংগ্রেস ছেড়েছিলাম। কারণ সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাঁত ছিল। বিজেপির সঙ্গেও আছে। আজ ভবানীপুরের এই অভিযোগে কংগ্রেসকে বিঁধলেন তৃণমূল নেত্রী। জাতীয়স্তরে তৃণমূলই একমাত্র বিকল্প বলে সুর চড়ান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কটাক্ষ করেছে বিজেপিও। 


রবিবার নির্বাচনী প্রচারে নেমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের আন্ডার স্ট্যান্ডিং, বিজেপিরও আছে। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানাতেও ছিল কংগ্রেস।


তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, '১৭০০ দল আছে, কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম, + একটাই সর্বভারতীয় দল তৃণমূল, যারা মাথা নোয়ায় না।'


উপনির্বাচনের উত্তাপ! দেশের নজরে ভবানীপুর! শেষ রবিবাসরীয় প্রচারের মঞ্চ থেকে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসকেও নিশানা করতে ছাড়লেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।


এদিন মমতা আরও বলেন, সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি। আমি কংগ্রেস ছেড়েছি। কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের আন্ডার স্ট্যান্ডিং আছে। এখনও আছে। বিজেপিরও আছে। ভবানীপুর থেকে মুর্শিদাবাদ, ভোট প্রচারের মঞ্চ থেকেও বারবার কংগ্রেসকে নিশানা করছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।


স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, এর প্রভাব কেন্দ্রে মোদি বিরোধী জোটের ওপর পড়বে না তো? অথচ বিধানসভা ভোটে জয়ের হ্যাটট্রিকের পরে দিল্লিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানে ছিলেন রাহুল গান্ধীও। সংসদের বাদল অধিবেশনে মোদি সরকারকে চেপে ধরতে এককাট্টা হয় বিরোধীরা।  সেই সময় কংগ্রেসের ডাকা একাধিক বৈঠকে যোগ দেয় তৃণমূল।


ভবানীপুর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থীও দেয়নি কংগ্রেস। তাহলে যারা ভবানীপুরের ভোটের ময়দানেই নেই, সেই কংগ্রেসকে এভাবে আক্রমণের কারণ কী? এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, সুযোগ বুঝে ফের বিরোধী ঐক্য নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, 'ভবানীপুরে কারা প্রার্থী দেয়নি সেটা মানুষ দেখেছে, কংগ্রেস কার সঙ্গে জোট করছে, আঁতাঁত আছে কি না, তা সবার কাছে পরিস্কার, গত নির্বাচনে কংগ্রেসকে শূন্য করে দিয়েছে মানুষ আগামী দিনে অধীর দা লোকসভার আসন বাঁচাতে তৃণমূলের হাত ধরতে পারে, এ নিয়ে বলতে পারি।'


এই প্রেক্ষাপটেই এদিন বিজেপি বিরোধী সর্বভারতীয় দলগুলিকে সরাসরি বার্তা দিয়ে সুর চড়ান অভিষেক। তিনি বলেন,  'মনে রাখবেন ভবানীপুরের ভোট আগামী দিন দিল্লিতে পরিবর্তনের জন্য। ১ লক্ষ ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেতাতে না পারলে ভারত বাঁচবে না। জামানত বাজেয়াপ্ত হবে ওদের। জানবেন, যত সর্বভারতীয় দল রয়েছে তার মধ্যে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস মেরুদন্ড বিক্রি করে না বশ্যতা স্বীকার করেনি।'


বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, 'এই ভোটের ফলাফল কোনভাবেই জাতীয় স্তরে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এই ভোট উনি নিজের স্বার্থে লড়ছেন। উনি যদি এতই আত্মবিশ্বাসী হোন তাহলে কেন রোজ মন্দির মসজিদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? কেন রোজ দফায় দফায় মিটিং করছেন?' পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-এ। তার আগে জাতীয় রাজনীতির স্রোত কোন দিকে বাহিত হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।


আরও পড়ুন: 'কেঁদে কেঁদে ভোটভিক্ষা করছেন মমতা, না হলে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না' নির্বাচনী প্রচারে কটাক্ষ রাহুল সিনহার