উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: বয়স ৬০-এর কোঠা পেরিয়েছে অনেকে আগেই। করোনা ওয়ার্ডে মানুষের সেবা করতে করতে আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। 


৩ দিন অচৈতন্য থাকার পর, ৩ বার পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরেও জয় করেছেন করোনাকে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেও কাজ করে চলেছেন অকুতোভয় প্রতিমা দেশমুখ।


কেউ নন, এমনকী একজন চিকিৎসকও নার্সের সঠিক সংজ্ঞা দিতে পারবেন না। বড় জোর বলতে পারবেন- নার্সরা সেবায় উৎসর্গীকৃত। সত্যিটা হচ্ছে, আরও অনেক বেশি কিছু। এমনটাই লিখেছিলেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। 


সেই সেবাকে জীবনের ব্রত করে ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’-এর আদর্শকে সামনে রেখে এই বয়সে আজও কাজ করে চলেছেন 
হাওড়ার উলুবেড়িয়ার সঞ্জীবন হাসপাতালে চিফ মেট্রন প্রতিমা।


২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারী। কেরলে পাওয়া গেল দেশের প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ। সেই বছর ২২ মার্চ মারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশে জনতা কার্ফু। 


২৫ মার্চ দেশজুড়ে জারি হল ২১ দিনের লকডাউন।  করোনার তীব্র আতঙ্ক তখন গোটা দেশে।  সেই সময়েও ষাটোর্ধ্ব এই নার্সের সারা দিনের ঠিকানা ছিল করোনা ওয়ার্ড। 


সল্টলেকের বাড়ি ভুলে হাসপাতালকেই করে ফেলেছিলেন বাড়িঘর। মানুষের সেবা করতে করতে হঠাৎই একদিন ঘনিয়ে আসে বিপদ। 


গত বছরের নভেম্বরে প্রতিমা আক্রান্ত হন করোনায়। কর্মক্ষেত্রেই চলতে থাকে তাঁর চিকিৎসা।  হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৩ দিন অচৈতন্য ছিলেন তিনি। পর পর তিনবার পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে পজিটিভ।  


তারপরেও করোনাকে হারিয়েছেন। নতুন করে ফিরেছেন কাজে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর যখন দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা, তখনও সেই কাজ চলছে সানতালে। দিন-রাত অক্লান্ত প্রতিমা। 


দিন কয়েক ধরে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকলেও ফের বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শুক্রবার প্রকাশিত স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯৯০ জন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫,১০,২০৮ জন। 


এই সময় পর্বে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন। বৃহস্পতিবার যেই সংখ্যাটা ছিল ১৭। আজ যা সামান্য হলেও বেড়েছে। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা সংক্রমিত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৭,৮৮৬ জনে।