উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও রুমা পাল, কলকাতা: জনপ্রতিনিধিদের নামে চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।  নারদ মামলায় সিবিআই ও ইডি-র চার্জশিট জমা প্রসঙ্গে এই অভিযোগ তুলে, দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, প্রয়োজনে দুই তদন্তকারী সংস্থার কর্তাদের বিধানসভায় তলব করা হতে পারে। 


সিবিআইয়ের পরে, নারদকাণ্ডে চার্জশিট জমা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটেই নাম রয়েছে-- রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের। 


বিধানসভার অধ্যক্ষের অফিস সূত্রে দাবি, বিধায়ক বা সাংসদদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা বা লোকসভার অধ্যক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা করা হয়নি।


কেন সেই নিয়ম লঙ্ঘিত হল? কেন চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হল না? সূত্রের খবর, সেই কারণ জানতে চেয়েই এবার দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। 


অধ্যক্ষের দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সেই চিঠি লেখা হয়ে গিয়েছে। সোমবার সকালে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে সিবিআই ও ইডি-র দফতরে। প্রয়োজনে বিধানসভায় দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের তলব করা হতে পারে। 


গত ১ সেপ্টেম্বর বিশেষ আদালতে চার্জশিট পেশ করে ইডি। ৩ জনপ্রতিনিধি-সহ মোট ৫ জনকে ১৬ নভেম্বর হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় ইডি-র বিশেষ আদালত। 


রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বিধায়ক মদন মিত্রকে সমনের চিঠি পৌঁছয় বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে। সূত্রের খবর, সেই চিঠি গ্রহণ করেনি বিধানসভার স্পিকারের অফিস। 


আর গোটা এই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কংগ্রেস রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মতে, অবশ্যই অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল। অধ্যক্ষের অনুমতি নিতে হয়। এভাবে সুয়োমোটো চার্জশিট দেওয়া যায় না।


অন্যদিকে, সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ি বলেন, চোখের সামনে দেখলাম একটা লোক টাকা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে অধ্যক্ষ অনুমতি দেয় না। নানারকম কথা বলে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।


সব মিলিয়ে নারদ-চার্জশিটে জনপ্রতিনিধিদের নাম দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ ঘিরে ক্রমশ চড়ছে তরজা।