ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষত এখনও দগদগে। এরইমধ্যে, ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে থার্ড ওয়েভের আশঙ্কা।
সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট রিপোর্টে বলা হয়েছে, অক্টোবরেই ভারতে শিখর ছুঁতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। আশঙ্কা, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ ছুঁতে পারে।
করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের জন্য, দায়ী ছিল কোভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ইতিমধ্যেই দেশে কোভিডের ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টের হদিশ পাওয়া গেছে। এই নিয়ে রিপোর্টে কেন্দ্রকে সতর্ক করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার এই নতুন স্ট্রেইন।
এই পরিস্থিতিতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগাম প্রস্তুতি শুরু করল রাজ্য সরকার। এই মর্মে রাজ্যজুড়ে ৭৯টি সরকারি হাসপাতালে সঙ্কটজনক রোগীদের জন্য বিশেষ পরিকাঠামো তৈরির নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। এই বিশেষ ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে হাইব্রিড সিসিইউ।
এর মধ্যে ৬টা বেডে থাকবে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা। বাকি ১৮টি বেডে থাকবে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের সাপোর্ট। জরুরি ভিত্তিতে রাজ্যের ৭৯টা হাসপাতালে বিশেষ পরিকাঠামো তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এর পাশাপাশি, জরুরি কাজে যাঁরা বিদেশে যাচ্ছেন তাঁদের ক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় টিকাকরণের ৮৪ দিনের ব্যবধান পরিস্থিতি বিচার করে শিথিল করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
এছাড়াও, চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত করতে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট সংশোধন করে বেসরকারি হাসপাতালে রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার ও নার্সিং স্টাফের সংখ্যা নির্দিষ্ট করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে বেড অনুপাতে রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার বা আরএমও কতজন থাকবেন, সেই সংখ্যাটা দ্বিগুণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাড়ানো হল রেজিস্টার্ড নার্সের সংখ্যাও।
নির্দেশ না মানলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, সরকারি নির্দেশের ফলে, ছোট নার্সিংহোম সমস্যায় পড়তে পারে। বেসরকারি হাসপাতালে অনেক সমস্যা থাকে। বড় হাসপাতালে সমস্যা নেই। ছোট নার্সিংহোমে সমস্যা হতে পারে।
রাজ্যে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা-গ্রাফ। ফের সাড়ে ৭০০ ছাড়াল রাজ্যে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ। পরপর ৩দিন ৭০০-র উপরে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ-সংখ্যা।
শুক্রবারের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৭৫৩ জন। পাশাপাশি ১৪ অগাস্টের পর করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু রাজ্যে। ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।