অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: চিকেন রোলের চিকেন ঠিক আছে তো? মোমোর পাতে টকটকে লাল সসে কোনও রাসায়নিক নেই তো? বোতলবন্দি পানীয় জল কি পুরোপুরি নিরাপদ? এসব খতিয়ে দেখতে চালু হল কলকাতা পুরসভার অত্যাধুনিক ফুডল্যাব। 


কলকাতার রাস্তা মানেই নানা পদের সমাহার। কিন্তু ফুটপাথের খাবারের মান এবং রাস্তার ধারের স্টলগুলির পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার। তাই পুজোর মুখে খাবারে ভেজাল ধরতে শুক্রবার থেকে অভিযান শুরু করছে কলকাতা পুরসভা। মোবাইল ভ্যানের মাধ্যমে বিভিন্ন খাবার পরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে মোবাইল ভ্যান থেকেই দেওয়া হবে খাবারের লাইসেন্স।


এই পরিস্থিতিতে পুজোর আগে নিজেদের বিশ্বমানের ল্যাবরেটরি চালু করল কলকাতা পুরসভা। হাডকো বিল্ডিংয়ের চারতলায় ৪ হাজার ৮০০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে নতুন ল্যাব। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এখানে অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে খাবার, পানীয় জল পরীক্ষা করা হবে। খাবারে রাসায়নিক, ভারী ধাতু, কীটনাশকের মতো উপাদান রয়েছে কি না? থাকলেও তা কত পরিমাণে রয়েছে? মূলত এই সব খতিয়ে দেখা হবে ফুডল্যাবে।


সেই সঙ্গে দেখা হবে, কোনও খাবার বা জলে জীবাণু আছে কি না? পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন ল্যাব আরও আধুনিক। ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আমরা খাবারের গুণমান পরীক্ষায় জোর দিচ্ছি। কলকাতা পুরসভার এই অত্যাধুনিক ফুড টেস্টিং ল্যাবের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ফুড সেফটি কমিশনার, FSSAI-এর পূর্বাঞ্চলের ডিরেক্টর।


গত  ১২ অগাস্ট বিভিন্ন দোকানে ও মলে বিক্রি হওয়া খাদ্যসামগ্রীর মান খতিয়ে দেখতে হানা দেয় ফুড সেফটি ডিপার্টমেন্ট। চাঁচল থানার পুলিশ, স্বাস্থ্য আধিকারিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দোকানে হানা দেন ফুড সেফটি ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকরা। অভিযানে নেমে উদ্ধার হয় বেশ কিছু মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া খাদ্য সামগ্রী। একই সঙ্গে একটি মলেও অভিযান চালান তাঁরা। এদিনের অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিশীথ মাহাতো, ফুড সেফটি অফিসার আয়েশা খাতুন, চাঁচল হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত বিশ্বাস সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। 


সূত্র মারফত ফুড সেফটি ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকরা খবর পান মালদার চাঁচলের বেশ কিছু দোকান দীর্ঘদিন ধরে বিনা লাইসেন্সে ব্যবসা করছিল। ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই তাঁদের নোটিসও পাঠানো হয়। কিন্তু তাতেও থোড়াই কেয়ার। নোটিস মেলা সত্ত্বেও একইভাবে চাঁচল বাজার ও কলেজ রোডের একটি মলে বিনা লাইসেন্সেই চলছিল ব্যবসা। ফলে এদিন তাঁদের দোকানে আচমকা হানা দেয় খাদ্য দফতর আধিকারিকেরা। দোকান থেকে উদ্ধার হয়েছে শিশুদের খাদ্যসামগ্রী, এ ছাড়াও মেয়াদ উত্তীর্ণ আরও একাধিক খাদ্য সামগ্রীও পাওয়া গেছে। দোকানদারদের জানানো হয়েছে, লাইসেন্স তৈরি না হওয়া পর্যন্ত দোকান বন্ধ রাখতে হবে। নির্দেশ অমান্য করে যদি এরপরেও বিনা লাইসেন্সে দোকান খোলা হয় তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।