অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করার কথা নাসার মঙ্গলযান Perseverance-এর। আজ পর্যন্ত এত বড় যান মঙ্গলে কখনও পাঠানো হয় নি। আর সেই মঙ্গলযানের সঙ্গে জড়িয়ে গেল বাঙালি যুবকের নাম। শ্রীরামপুরের বাসিন্দা শৌনক দাস। বেশ কয়েক বছর ধরে গুগল ম্যাপের লোকাল গাইড হিসেবে কাজ করছেন। বছরদুয়েক আগে নাসা জানায়, মঙ্গলযাত্রার এই পর্বে যারা ভার্চুয়াল যাত্রী হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে চান তাদের নাম নথিভুক্তকরণ শুরু হচ্ছে। সেখানেই আবেদন জানান শৌনক। পরে নাসার তরফে তাঁকে ইমেল করে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে এক কোটিরও বেশি মানুষের সঙ্গে তার নামও সংযোজিত হচ্ছে ভার্চুয়াল যাত্রী তালিকায়। মঙ্গল গ্রহে গবেষণার জন্য রেখে আসা হবে একটি মাইক্রোচিপ। সেখানেই থাকবে শৌনক-সহ সকল যাত্রীর নাম ঠিকানা। শুধু তাই নয়, এই ভার্চুয়াল সফরের জন্য রীতিমতো তাদেরকে বোর্ডিং পাসও পাঠিয়েছে নাসা।


মঙ্গল গ্রহের যে অংশে Perseverance অবতরণ করবে, তার নাম ‘জেজেরো ক্রেটার’। যা লালগ্রহের একটি শুকনো সরোবর এলাকা। অবতরণের সময়টিই এই অভিযানের সবচেয়ে কঠিন অংশ বলে মানছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। সাত মিনিটের এই সময়টিকে Seven Minutes of Terror বলেও অভিহিত করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে Perseveranceএর মধ্যেও রাখা হয়েছে উন্নততর নেভিগেশন ব্যবস্থা। যার ফলে মঙ্গলপৃষ্ঠ ছোঁয়ার আগে সে নিজেই ছবি তুলে নিরাপদ অবতরণের জায়গা খুঁজে নিতে পারবে।




নাসার অন্যতম ডিরেক্টর লোরি গ্লেজের কথায়, "যদি কেউ মনে করেন এই অভিযান জটিল, সেক্ষেত্রে তার ধারণা ঠিক। কেউ যদি মনে করেন এই অভিযান কঠিন, তিনি অবশ্যই সঠিক।" মঙ্গলে কখনও প্রাণের সম্ভাবনা ছিল কিনা, তা অনুসন্ধান করা অবশ্যই Perseverance-এর অন্যতম কাজ। পাশাপাশি Perseverance মঙ্গলে রেখে আসবে ৪৩টি টেস্ট টিউব। যা মঙ্গলগ্রহ থেকে পাথর ও ধূলিকণা সংগ্রহ করবে। ২০২৬ সালে নাসার পরবর্তী অভিযানে সেই টেস্ট টিউবগুলি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মঙ্গল গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে নাসা।


তবে তার আগে প্রয়োজন সফল অবতরণ। যা নিয়েই ব্যস্ত নাসার বিজ্ঞানীরা। ভারতীয় সময় রাত আড়াইটে নাগাদ অবতরণ হওয়ার কথা Perseverance-এর। আর শ্রীরামপুরে বসে সেই নিয়ে বেশ উত্তেজিত শৌনক দাস। রাত জেগে নিজের নাম সম্বলিত মঙ্গলযানের সাফল্য দেখার অপেক্ষায় তিনি। আর হবেন নাই বা কেন, নাসার আরও একটি প্রকল্পের অংশীদার হয়ে ইতিমধ্যেই মঙ্গলগ্রহে জমিও কিনে ফেলেছেন তিনি। সেই জমির গ্রহে আগামী কয়েকদিন দাপিয়ে বেড়াবে Perseverance। এটুকুই আশা বঙ্গতনয়ের।