আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম থেকে জঙ্গি ফরদিন আহমেদ খান্ডে। পুলিশের ছেলে হয়েও নাশকতায় লিপ্ত হওয়ার নজির রয়েছে বহু। নিউটাউনের এনকাউন্টারে পুলিশ বাবার গ্যাংস্টার পুত্রের মৃত্যু, ফের মনে করিয়ে দিয়েছে সেই সব নাম।


বাবা পঞ্জাব পুলিশের প্রাক্তন ইনস্পেক্টর। ছেলে গ্যাংস্টার। বাবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতেন। আর ছেলে, হেলায় আইনশৃঙ্খলা ভাঙত। নিউটাউনের এনকাউন্টারে নিহত গ্যাংস্টার জয়পাল সিং ভুল্লারের পিতৃ-পরিচয় শুনে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে আরেক গ্যাংস্টারের কথা। যে পুলিশে ছেলে হয়েও, শেষ পর্যন্ত মিশে গেছিল অন্ধকার জগতে। তারপর হয়ে উঠেছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডের বেতাজ বাদশা। নামটা অতি পরিচিত। দাউদ ইব্রাহিম কাসকর। 


বম্বে পুলিশের হেড কনস্টেবল ইব্রাহিম কাসকরের ছেলে। তারপর ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড ডন। নয়ের দশকে দাউদের চক্রান্ত নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দেশকে। যে বম্বতে তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা, ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ একের পর এক বিস্ফোরণে সেই বম্বেকেই ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছিল দাউদ। 


প্রাণ গেছিল আড়াইশোর বেশি মানুষের। আহত হন প্রায় দেড় হাজার। সেই নারকীয় ঘটনার নেপথ্যে ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম। 


বাবা পুলিশের উর্দি গায়ে বম্বেকে রক্ষা করতেন। আর ছেলে সেই বম্বের বুকেই রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল। একবার নয়, একাধিকবার। পাকিস্তানে বসে বারবার ভারতের ওপর আঘাত হানার ছক কষেছে দাউদ। 


রুপোলি পর্দার ছবিতে বারবার ভিলেন হয়ে উঠে এসেছে ডি কোম্পানির মাথা। কিন্তু, বম্বে পুলিশের হেড কনস্টেবলের ছেলেকে ছুঁতে পারেনি ভারতের পুলিশ। পাকিস্তানে বসে চক্রান্ত চালিয়ে গেছে সে। তবে এই তালিকায় দাউদ একা নয়। 


২০১৮ সালে জম্মু-কাশ্মীরে সিআরপিএফের গুলিতে ফরদিন আহমেদ খান্ডে নামে এক জঙ্গির মৃত্যু হয়। তার বাবা শ্রীনগরে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। 


এবার নিউটাউনের এনকাউন্টারে নিহত হল হল এক পুলিশ বাবার গ্যাংস্টার পুত্র। পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারি এড়াতে নানা ধরণের কৌশল ব্যবহার করত ধূর্ত জয়পাল। 


হলিউডের থ্রিলার দেখা থেকে শুরু করে নভেল পড়া। আত্মগোপনের নিত্যনতুন কায়দা শিখত সে। ইলেকট্রনিক গ্যাজেটসের ব্যবহার অত্যন্ত কম করত। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মাঝেমধ্যেই নিজের চেহারাতেও নানা ধরণের পরিবর্তন করত ভুল্লার। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না।