কলকাতা: সবে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবে হবে করছে। কেউ ওয়ার্ক ফ্রম হোমে ব্যস্ত। কেউ বা দিচ্ছেন ভাত ঘুম। আর ঠিক সেই সময় নিউটাউনের সাপুরজি আবাসনে তখন দুষ্কৃতীদের খোঁজে পুলিশকর্মীরা। এ যেন কোনও সিনেমার দৃশ্য। হঠাৎই গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠল আবাসন চত্বর। আবাসনের একটি ব্লকের সামনে গুলির লড়াই চলল কয়েক মিনিট। আহত হন এক পুলিশকর্মী। এনকাউন্টারে মৃত্যু দুই দুষ্কৃতীর। গুলির শব্দে তখন নিজেদের কাজ ফেলে নীচে ছুটলেন আবাসনের বাসিন্দারা। রুদ্ধশ্বাস ঘটনার সাক্ষী থাকল নিউটাউনের সাপুরজি।
ঠিক কী ঘটেছিল? কী বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা?
এক বাসিন্দা বলেন, আমার বাড়ি ব্যারাকপুরে। চলে যাব বলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার গাড়ির ড্রাইভার বলেন, ভেতরে ঢুকতে পারছি না। বি ব্লকের সামনে গুলি চলছে। সঙ্গে সঙ্গে নীচে নেমে আসি আমি। আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, অন্তত ৩ থেকে ৪ রাউন্ড গুলি চলেছে। দেখতে পাই বিল্ডিংয়ের ঢোকার মুখেই গুলি চালানো হচ্ছে। এক পুলিশকর্মীর হাতে লেগেছে।
পঞ্জাব থেকে এসে ওই আবাসনে থাকত দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীরা রয়েছে খবর পেয়ে এদিন নিউটাউনের অভিজাত আবাসনের বি ব্লক ঘিরে ফেলেন এসটিএফ-এর আধিকারিকরা। পুলিশ এসেছে বুঝতে পেয়েই দুষ্কৃতীরা নাইন এমএম পিস্তল থেকে গুলি চালাতে শুরু করে। পাল্টা গুলি চালায় এসটিএফ-ও। সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে দরজা লক্ষ্য করে গুলি চালান পুলিশ আধিকারিকরা। ঘটনায় মৃত্যু হয় পঞ্জাবের গ্যাংস্টার যশপ্রীত সিংহ, জয়পাল ভুল্লার। আহত হয়েছেন এক পুলিশকর্মী। তাঁর নাম কার্তিক মোহন ঘোষ। এসটিএফ অফিসারের বাঁ কাঁধে গুলি ঢুকে বেরিয়ে যায়। দুষ্কৃতীদের গুলিতে পিঠ, কাঁধে গুলির আঘাত এসটিএফ অফিসারের। আর এই ঘটনার পরই কড়া নিরাপত্তা ওই আবাসনে। আরও কোনও দুষ্কৃতী রয়েছে কি না তার তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, সোমবার সিউড়ি থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র উদ্ধার করে এসটিএফ। গ্রেফতার করা হয় ২ অস্ত্র ব্যবসায়ীকে। তাঁদের জেরা করেই গ্যাংস্টার জয়সিংহ পারমারের কথা জানতে পারে এসটিএফ। জানা গিয়েছে, ২২ মে থেকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ভাড়ায় থাকছিল দুষ্কৃতীরা। ২০১৬ থেকে ফেরার ছিল ২ পুলিশ খুনের অভিযুক্ত জয়পাল। কলকাতা পুলিশের এসটিএফের সঙ্গে পঞ্জাব পুলিশের অভিযানের আজ এনকাউন্টার হয়। সূ্ত্রের খবর, একাধিক খুন, ডাকাতি, তোলাবাজিতে অভিযুক্ত গ্যাংস্টার জয়পাল।