ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: এনআরএস হাসপাতালে রোগী-ভোগান্তির মর্মান্তিক ছবি। মিলল না অ্যাম্বুল্যান্স, বৃষ্টির মধ্যে স্ট্রেচারে নিতে হল রোগীকে। এজেসি বোস রোডের উপর দিয়ে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে নিয়ে যাওয়া হল রোগীকে। এই দৃশ্য ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এনআরএসে করোনা চিকিৎসা চালু হওয়ায় আপাতত মৌলালি-র স্টুডেন্টস্ হেলথ হোমে চলছে বক্ষ রোগ বিভাগটি।  ওই রোগীকে সেখানেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সও বরাদ্দ আছে।  কিন্তু তার পরেও এদিনের ঘটনায় বিষ্মিত হাসপাতালের আধিকারিকরা। রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে ওয়ার্ডের নাসর্দের থেকে। তারপর রিপোর্ট যাবে স্বাস্থ্য ভবনে।


ঝিরঝির করে বৃষ্টি পরছে। তার মধ্যেই রাস্তা দিয়ে স্ট্রেচার ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর তাতে শোয়ানো রোগীকে বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে কাপড়ে ঢাকা হয়েছে! শনিবার সকালে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে এজেসি বোস রোডের এমন দৃশ্য দেখে চমকে উঠে ছিলেন অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও। সেটির সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। প্রকাশ্যে আসতেই অবশ্য নড়েচড়ে বসে এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কথা স্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাজ্যের একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে কী করে?


সূত্রের খবর, এনআরএস হাসপাতালের পুরুষ মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ওই রোগী। এদিন সকালে তাঁকে বক্ষ রোগ বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। এনআরএস হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসা শুরু হওয়ায় আপাতত মৌলালি-র স্টুডেন্টস্ হেলথ হোমে বক্ষ রোগ বিভাগটি চলছে। মূল হাসপাতাল থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরের ওই জায়গায় রোগী যাওয়া-আসার জন্য নির্দিষ্ট একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরেও এ দিনের ওই ঘটনায় বিষ্মিত হাসপাতালের আধিকারিকরাও।


ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, স্ট্রেচার ঠেলছেন এক ব্যক্তি। সামনে থেকে সেটি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন আরও দু’জন। তাঁদের একজনের এক হাতে আবার ছাতা ধরা রয়েছে। স্ট্রেচারের নীচে রাখা রয়েছে একটি অক্সিজেন সিলিণ্ডার। তা থেকে নল লাগানো রয়েছে রোগীর নাকে। বৃষ্টিতে ভেজার হাত থেকে বাঁচতে রোগীকেও প্রায় কাপড় দিয়ে মুড়ে রাখা হয়েছে। কেন ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে না নিয়ে গিয়ে, ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে এমন ভাবে নিয়ে যাওয়া হল, তা নিয়ে অবশ্য এখনও সদর্থক কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি।


হাসপাতাল সূত্রে দাবি, রোগীর পরিজনেরাই তাড়াহুড়ো করে রোগীকে স্ট্রেচারে করে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নাসর্দের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেটি পাওয়ার পরে তা স্বাস্থ্য ভবনে জমা করা হবে।