কলকাতা: এবার অক্সিজেনের অভাবে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ কলকাতার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে। অভিযোগ, গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতেদর নাম যমুনা নাথ, মানোয়ারা বেগম ও নিমাই পাল।
পরিবারের অভিযোগ, অক্সিজেন না মেলায় মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা বলেন, গতকাল ওই রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন। আজ সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় সামনে এসেছে বিদ্যাসাগর হাসপাতালের এক অভিনব সঙ্কট। হাসপাতালে মজুত অনেক অক্সিজেন সিলিন্ডার। কিন্তু ফ্লো মিটার না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
কী এই ফ্লো-মিটার?
অক্সিজেন সিলিন্ডারের মুখে লাগানো থাকে একটা চাকার মতো জিনিস। যার সঙ্গে আটকানো থাকে একটি মিটার। এটাই ফ্লো-মিটার। সিলিন্ডার থেকে অক্সিজেন কোন গতিতে বের হবে, তা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এই ফ্লো মিটারের মাধ্যমে। ফ্লো মিটার অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘হাসপাতালে অসংখ্য অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রয়েছে। কিন্তু ফ্লো মিটার না থাকায় অক্সিজেন দেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।’
কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘২০টি ফ্লো মিটারেরর বরাত দেওয়া হলেও এখনও মেলেনি। সেই কারণেই অক্সিজেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না।’
এদিনই অন্ধ্রপ্রদেশেও অক্সিজেনের অভাবে ১১ জন করোনা রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর মিলেছে। ঘটনাটি ঘটেছে তিরুপতির রুইয়া হাসপাতালে।
হাসপাতালে অক্সিজেন রিলোডে পাঁচ মিনিট দেরি হওয়ায় ১১ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। চিত্তুরের জেলাশাসক জানিয়েছেন, মৃত্যুর পিছনে অক্সিজেনের চাপ কমে যাওয়াই কারণ। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডি।
গত ৮ তারিখ, অক্সিজেনের অভাবে করোনা রোগী মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। হাসপাতাল ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবেই রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এরপরই হাসপাতাল ভাঙচুর করে মৃতের আত্মীয়রা। পুলিশকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
করোনা আবহে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ২টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।