সত্যজিৎ বৈদ্য ও রঞ্জিত সাউ, কলকাতা : সল্টলেকে ভিন রাজ্যের যুবকের রহস্যমৃত্যুতে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, অভিভাবকদের মৃত্যুশোকের অভিঘাতে অবসাদে ভোগার জেরেই হিলিয়াম গ্যাস ইনহেল করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে পেশায় ব্যাঙ্কে কর্মরত পি স্যামরিথ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২০-তে বিশাখাপত্তনমে গ্যাস লিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ব্যাঙ্ক কর্মী পি স্যামরিথের মা-বাবার। মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে না পেরেই পাইপের মাধ্যমে শরীরে হিলিয়াম গ্যাস নিয়ে ২৬ বছরের যুবর আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। গতকাল সল্টলেকের একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। দেহ সনাক্ত করতে হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় আসেন মৃতের আত্মীয়রা। 


সোমবার গভীর রাতে সল্টলেকের একটি আবাসনে উদ্ধার হয়েছিল যুবকের মৃতদেহ। তাঁর সারা শরীরে জড়ানো সেলোটেপ। পাশে রাখা ছিল পাশে রাখা হিলিয়াম গ্যাসের সিলিন্ডার।সেখান থেকে আসা পাইপ ঢোকানো যুবকের মুখে। মৃতের দেহের পাশে উদ্ধার হয়েছিল একটি সুইসাইড নোটও। পুলিশ প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার অনুমান করলেও বিষয়টি নিয়ে আরও নিশ্চিত হতে চাইছিল। পুলিশ সূত্রে দাবি, তদন্তে জানা গেছে, সম্প্রতি পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুর পর থেকে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন স্যামরিথ। কিছুদিন ধরে অফিসে যাচ্ছিলেন না তিনি। আজ তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতবছর স্যামরিথের বাবা-মায়ের গ্যাস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা। মনোবিদরাও জানাচ্ছেন, কাছের আত্মীয় বিয়োগের শোকে অবসাদগ্রস্থ হয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নেওয়ার কারণ হতে পারে।



হায়দরাবাদের ছেলে স্যামরিথ ফ্ল্যাটে আরও ২ জনের সঙ্গে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেন। সোমবার বন্ধুরা ফোনে সাড়া না পেয়ে, ফ্ল্যাটে এসে তাঁকে ওভাবে সেলোটেপ জড়ানো ও মুখে হিলিয়াম গ্যাসের নল লাগানো অবস্থায় দেখেন। সাধারণত, আকাশে ওড়ার বেলুন এবং ডিপ সি ডাইভিংয়ের ক্ষেত্রে হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তবে এভাবে হিলিয়াম গ্যাস টেনে আত্মহত্যার ঘটনা নজিরবিহীন। কীভাবে হিলিয়ামের সিলিন্ডার যুবকটি জোগাড় করেছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আর এই মুহূর্তে তরতাজা যুবকের এভাবে আত্মহত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত, হতবাক সল্টলেকের আবাসনের বাসিন্দারা।