কলকাতা: এই প্রথম রাজ্যে করোনায় মৃত ব্যক্তির প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি রিপোর্ট জমা পড়ল স্বাস্থ্য ভবনে। 


মৃত্যুর পরও কোভিড-গবেষণার ক্ষেত্রে নজির গড়ে গেলেন রাজ্যে অঙ্গদান আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ব্রজ রায়। তাঁর সূত্র ধরেই এই প্রথম রাজ্যে করোনায় মৃত ব্যক্তির প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি রিপোর্ট জমা পড়ল স্বাস্থ্য ভবনে।


করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ মে, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে মৃত্যু হয় রাজ্যে মরণোত্তর দেহদান আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ গণদর্পনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ব্রজ রায়ের।


করোনায় মৃত্যুর ফলে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে কী ধরনের প্রভাব পড়ে, তা জানতে আরজি কর হাসপাতালে ব্রজ রায়ের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। 


গত ১৪ তারিখ আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্রজ রায়ের দেহের প্যাথলজিক্যাল অটোপসি হয়। হাসপাতাল সূত্রে দাবি, সেটাই ছিল পূর্ব ভারতে প্রথম কোনও কোভিডে মৃত ব্যক্তির প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি। 


বুধবার স্বাস্থ্য ভবনে জমা পড়ল প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি রিপোর্ট। রিপোর্টের কপি তুলে দেওয়া হল গণদর্পণ সংস্থার হাতে। 


রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনায় ফুসফুস ও কিডনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় নষ্টই হয়ে গিয়েছে ফুসফুসের আস্তরণ। সেই জন্যই রোগীদের শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে বলে অনুমান মেডিক্যাল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের। 


কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় করোনা রোগীদের বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরাণ্বিত হয় বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। 


ব্রজ রায়ের পর, আরও চারজন করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহে অটোপ্সি হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সত্যরঞ্জন দত্ত। 


বছর বিরাশির সত্যরঞ্জন দত্তের বাড়ি নৈহাটিতে। চলতি মাসে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। ২২ তারিখ ভর্তি করা হয় এমআর বাঙুর হাসপাতালে। ২৮ তারিখ মারা যান।


পরিবার সূত্রে খবর, দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার দীর্ঘদিন পর করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। সেই অর্থে এমন ব্যক্তির প্যাথলজিক্যাল অটোপসি রাজ্যে প্রথম। গত শনিবার আরজি করে হাসপাতালেই তাঁর দেহের অটোপ্সি হয়। 


কোভিডে কোন অঙ্গে কতটা ক্ষতি? তা নিয়ে গবেষণায় কাজে লাগবে করোনায় মৃত ব্যক্তির প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি রিপোর্ট। এমনই দাবি চিকিৎসকদের।