প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: পেগাসাস তদন্তে রাজ্য সরকারের গঠিত কমিশনের তরফে ২১ জনকে তলব করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, এই ২১ জনের মধ্যে রয়েছেন রাহুল গাঁধী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, সিবিআইয়ের প্রাক্তন অধিকর্তা রাকেশ আস্থানা, রাজ্যের একজন প্রাক্তন আইএএস।


ইতিমধ্যেই এই ২১ জনের মধ্যে পাঁচজন তাঁদের বয়ান রেকর্ড করে কমিশনের কাছে পাঠিয়েছেন বলে কমিশন সূত্রে খবর। যাঁরা কমিশনের নোটিসে সাড়া দেননি, তাঁদের দ্বিতীয়বার নোটিস পাঠানো হবে।


সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মদন লকুর ও হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যকে নিয়ে গঠিত হয় কমিশন।


এ বছরের জুলাই মাসে ইজরায়েলি স্পাইওয়ার পেগাসাস ঘিরে হইচই শুরু হয় বিশ্বজুড়ে। দ্য গার্ডিয়ান দাবি করে, ভারতের মতো সারা বিশ্বের ১৮০ জনের বেশি সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, শিল্পপতি, ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের ফোন হ্যাক করা হয়েছে পেগাসাসের মাধ্যমে। ‘দ্য ওয়ার’-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, হ্যাকারদের নিশানায় ছিলেন রাহুল গাঁধী থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধী নেতা, এমনকী প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার ছিলেন অশোক লাভাসার মতো ব্যক্তিত্ব।


২৭ অক্টোবর পেগাসাসকাণ্ডের তদন্তে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে সর্বোচ্চ আদালত। তিন সদস্যের এই কমিটির প্রধান সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আরবি রবীন্দ্রন। কমিটির বাকি দুই সদস্য অলোক জোশী ও সন্দীপ ওবেরয়। কমিটিকে সাহায্য করবেন তিন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। এঁরা হলেন গাঁধীনগরের ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্স কমিটির ডিন নবীনকুমার চৌধুরী, কেরলের অমৃত বিশ্ব বিদ্যাপীঠমের স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক প্রভাকরণ ও আইআইটি বম্বের অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর অশ্বিন অনিল গুমস্তে। 


সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ খণ্ডন করা হয়নি। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে পিটিশনকারীদের বক্তব্য মেনে নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই। এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের নজরদারি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হল।


অন্যদিকে, পেগাসাস প্রস্তুতকারী সংস্থা এনএসও-কে কালো তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, মানবাধিকারের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন।