কলকাতা:     ‘’উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে।


                     মোর চিত্তমাঝে


                     চির-নূতনেরে দিল ডাক


                    পঁচিশে বৈশাখ’’।


আজ ২৫ বৈশাখ।বাঙালির প্রিয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আজ জন্মদিন। কেবল বাঙালি নয়, আপামর ভারতবাসীকে যিনি বারবার মুগ্ধ করেছেন তাঁর লেখনীতে, গানে, কবিতায়, দর্শনে, তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ কবির ১৬০তম জন্মজয়ন্তী। আজ দিনভর তাঁরই লেখা গান, গল্পে, কবিতায় কবি-স্মরণ। করোনা আবহে বিধি মেনেই আজ কবিকে শ্রদ্ধা নিবেদন- ‘তোমারে স্মরণ করি আজ এই দারুন দুর্দিনে 
হে বন্ধু , হে প্রিয়তম’।  
১২৬৮ সালের ২৫ শে বৈশাখের পূণ্য লগ্নে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।  বিশ্বসাহিত্যের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিভা তিনি।  বাংলা তথা ভারতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশ-প্রসারে তাঁর অবদান অসামান্য। বাঙালির মননে ও সংস্কৃতি-কৃষ্টিতে তিনি  চিরস্মরণীয়। শুধু সাহিত্য ও সংস্কৃতিই নয়, দর্শন, পরাধীন ভারতের রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনেও অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। 
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী  রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীত রচয়িতা-সুরকার, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী,, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, সংগীতশিল্পী ও দার্শনিক। নতুন পথের নয়া দিগন্ত রচিত হয়েছিল তাঁর লেখণীতে।  তিনিই গান বেঁধেছিলেন-
‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো।
একলা রাতের অন্ধকারে আমি চাই পথের আলো॥‘


তাঁর লেখা গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক- তাঁর বাণী আজও আমাদের উদ্বুদ্ধ করে, অনুপ্রাণিত করে। কঠিন এই সময়ে তাঁর চিরস্মরণীয় কিছু অবিস্মরণীয় উদ্ধৃতি-


-“চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী
বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি”


- ‘’সুশিক্ষার লক্ষণ এই যে, তাহা মানুষকে অভিভূত করে না, তাহা মানুষকে মুক্তিদান করে।‘’


-“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।”


-“অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তবে ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে।”


- “তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।”


-“আগুনকে যে ভয় পায়, সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না।”


-“নিজের অজ্ঞতা সম্বন্ধে অজ্ঞানতার মতো অজ্ঞান আর তো কিছু নাই।”


-“মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন।”


‘’পৃথিবীর উপকার করার ইচ্ছা থাকলেও কৃতকার্য হওয়া যায় না, কিন্তু তার বদলে যেটা করতে পারি সেইটে করে ফেললে অনেক সময় আপনি পৃথিবীর উপকার হয়, নিদেন একটা কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়।‘’


-“আছে দু:খ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে..”