নয়াদিল্লি: যাবতীয় দাবিদাওয়া নিয়ে এখনও আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই আবহেই রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় উঠল সুপ্রিম কোর্টে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজকর্ম কতদূর এগিয়েছে, তা নিয়ে এদিন আদালতে হলফনামা জমা দেয় রাজ্য সরকার। চিকিৎসকদের আইনজীবী করুণা নন্দী রাজ্যের দাবি নস্যাৎ করে দেন। আবার ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন খোদ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। (RG Kar Case)


মঙ্গলবার শুনানি শুরু হলে, আদালতে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এতেই ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে, যেমন, কোথায় কত নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করা উচিত, কয়টি বিশ্রামকক্ষ থাকবে হাসপাতালে, সিসিটিভি বসাতে হবে কোথায় কোথায়, এই সংক্রান্ত সুপারিশ-সহ তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। (Supreme Court)


কিন্তু ৯ সেপ্টেম্বরের পর ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের কোনও বৈঠকই হয়নি বলে আজ উঠে আসে আদালতে, যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের কাজে কোনও অগ্রগতি হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, "৯ সেপ্টেম্বরের পর কী কাজ করেছে টাস্ক ফোর্স? ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত কাজ এগোয়নি কেন? কেন্দ্রীয় সরকার এক্ষেত্রে পদক্ষেপ করুক যাতে, আগামী দিনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করতে পারে টাস্ক ফোর্স। নির্দিষ্ট সময় অন্তর টাস্ক ফোর্সের বৈঠক হতে হবে।" আগামী শুনানিতে সুপারিশ জানাতেও বলা হয়েছে টাস্ক ফোর্সকে।  যদিও সলিসিটর জেনারেল জানান, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্যই অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিতে দেরি হচ্ছে ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের। অনেক কাজ করতে হচ্ছে টাস্ক ফোর্সকে, ছোট ছোট গ্রুপ তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। 


আর জি কর-সহ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তার কী ব্যবস্থাপনা হয়েছে এখনও পর্যন্ত, সে নিয়ে আদালতে রাজ্য জানায়, ১৮টি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৯০-৯৮ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। পরিকাঠামো, সুযোগ-সুবিধা, বায়োমেট্রিক এন্ট্রি সংক্রান্ত যা নির্দেশ দিয়েছিল আদালত, প্রায় সম্পূর্ণ হওয়া পথে। রাজ্যের হয়ে আদালতে আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী সওয়াল করেন। তিনি জানান, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আর জি করের সব কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অন্য হাসপাতালগুলির কাজ সম্পূর্ণ হবে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে।


যদিও রাজ্যের দাবি নস্যাৎ করে দেন চিকিৎসকদের আইনজীবী করুণা নন্দী। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার যে দাবি করছে, তার কিছুই হয়নি। যদিও রাজ্য জানায়, ১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে নিরাপত্তা খাতে। ১৫১৪ নিরাপত্তারক্ষী, যার মধ্যে ৯১০ জন মহিলা, তাঁদের প্রশিক্ষণ চলছে। আদালত জানায়, রাজ্যের হলফনামা এভাবে উপেক্ষা করা যায় না। পাশাপাশি আদালত জানায়, রোগী কল্যাণ সমিতির জায়গায় ইন্টেগ্রেটেড হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আনা হয়েছে। এতে আইনজীবী নন্দী সিনিয়র এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের নিরাপত্তা কমিটিতে রাখার কথা বলেন। রাজ্যের আইনজীবী দ্বিবেদী জানান, চিকিৎসকদের শলা-পরামর্শ করেই পদক্ষেপ করছে রাজ্য।