কলকাতা: এবার বেসুরো সব্যসাচী দত্ত। লখিমপুরের ঘটনা নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের সমালোচনায় সব্যসাচী। তিনি বলেছেন, ‘কোনও আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া পদ্ধতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ, এতো তালিবান নয়। লখিমপুরের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক, দোষীদের ফাঁসি হওয়া উচিত।‘ লখিমপুরকাণ্ডে মন্তব্য সব্যসাচী দত্তর। উল্লেখ্য, গতকাল বিজেপির সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন যে, ‘১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপই করেছে।’


বিরোধী নেতানেত্রীদের লখিমপুরে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওই মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, এ রাজ্যেও অনেক জায়গায় বিজেপি নেতানেত্রীদের যেতে দেওয়া হয় না।


উল্লেখ্য, ২০১৯-এ দুর্গাপুজোর আগে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।


বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ব্যাপক সাফল্যের পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া একাধিক নেতা ফের পুরানো দলে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ ফিরেও এসেছেন। এই অবস্থায় সব্যসাচীর মন্তব্যে জল্পনা বেড়েছে।


দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে! সামলানোর ক্ষমতা আছে যোগী প্রশাসনের। এই মন্তব্যের সমালোচনা করে সব্যসাচী দত্ত বলেছেন,  যদি মানুষকে পিষে মারা সমর্থন করেন, তা হলে কিছু বলার নেই!


উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে ৪ কৃষককে গাড়ির চাকায় পিষে মারার অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলের বিরুদ্ধে।সামনে এসেছে এই ভয়ঙ্কর ছবি। যাতে দেখা যাচ্ছে একটি কালো গাড়ি আন্দোলনরত কৃষকদের পিষে দিয়ে চলে যাচ্ছে।তারপর ৭২ ঘণ্টা কেটে গেছে।


এফআইআর হয়েছে।অথচ মন্ত্রী-পুত্র আশিস মিশ্রকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।বিরোধীরা দাবি করলেও, বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রও পদত্যাগ করেননি।উল্টে, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, অখিলেশ যাদবের মতো বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের লখিমপুরে যেতে না দিয়ে বন্দি করে রাখা এবং ১৪৪ ধারা জারি করে বিতর্কে জড়িয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার।


আর এই প্রেক্ষাপটেই উত্তরপ্রদেশের বিজেপির সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে  বঙ্গ বিজেপির দুই নেতার মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে।দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পরে সব্যসাচী দত্তর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, আগামী দিনে কি বড় কোনও চমক দিতে পারেন সব্যসাচী? শিবির বদল করতে পারেন তিনি?


২মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে সব্যসাচী দত্তকে সেভাবে সক্রিয়ভাবে বিজেপির হয়ে ময়দানে নামতে দেখা যায়নি। বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হ্যাটট্রিকের পরে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বিজেপিতে ভাঙন শুরু হয়েছে।এক এক করে বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।এবার লখিমপুরকাণ্ডের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে সরাসরি দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির বক্তব্যের সমালোচনা করা সব্যসাচী দত্তকে নিয়ে জল্পনার স্রোত বইতে শুরু করেছে।