আবীর দত্ত, সুনীত হালদার ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: প্রকৃতির রুদ্ররূপ। ভয়ঙ্কর তুষারপাত ও ধসে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের একাংশ। বেড়াতে গিয়ে, ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছে বাংলার একাধিক পরিবার। দুঃস্বপ্নের স্মৃতি নিয়ে ঘরে ফিরলেন তাঁরা। 


পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে একের পর এক পাথর। যেন পাথরবৃষ্টি হচ্ছে। উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়ে, ভয়াবহ এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন কলকাতা পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর ও তাঁর পরিবার। কলকাতা পুরসভা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর গৌতম হালদার জানাচ্ছেন, সারা দিন-সারা রাত বৃষ্টি, সকালে মুসৌরী থেকে বেরোচ্ছি, চারদিকে রেড এলার্ট। 


ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরের মেয়ে বলছেন, শ্রীনগর রোড বন্ধ হয়ে যায়, এই রাস্তা তৈরি হয়নি। আমাদের পিছনে ৪ -৫টা গাড়ি ছিল। রাত আটটা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছিলাম। হেলিকপ্টার বলল, ফ্লাই হবে না। কেদারনাথ দেখা হল না।


একই পরিস্থিতির শিকার, হাওড়ার বেশ কয়েকজন পর্যটকও। তাঁদের দাবি,  ১৭ অক্টোবর মানালি থেকে কাজা যাওয়ার পথে, বেতাল নামে একটি জায়গায় প্রবল তুষারঝড়ের কবলে পড়েন। মাঝ রাস্তায় আটকে যায় বাস। বাসের মাথায় প্রায় তিন ফুট বরফ জমে যায় বলে দাবি আটকে পড়া পর্যটকদের।


এই অবস্থায়, দুদিন তাঁরা বাসেই আটকে ছিলেন। তিন দিনের মাথায়, পরিস্থিতি একটু ভাল হলে একটি সরকারি হোটেলে তাঁরা আশ্রয় নেন। সেখানে, একটি হেলিকপ্টার গেলেও তাঁদের উদ্ধার করেনি বলে অভিযোগ। ২২ অক্টোবর, তাঁদের উদ্ধার করা হয়। ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার, বরফ ভেঙে তাঁদের নিয়ে আসা হয় নিরাপদ আশ্রয়ে। বর্তমানে তাঁরা হিমাচল প্রদেশের কল্পায় রয়েছেন।


আটকে পড়া পর্যটক অতীশ মুখোপাধ্যায় বলছেন, কার্যত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছেন হুগলির উত্তরপাড়ার ঘোষ পরিবারও। নৈনিতাল ঘুরতে গিয়ে আটকে পড়েন। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন তাঁরা। 


উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মমি ঘোষ অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে বলছেন, দেখছি, চোখের সামনে গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। উত্তরপাড়ার বাসিন্দা স্নেহাশিস ঘোষও উত্তরাখণ্ডে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। রবিবারই, বাড়ি ফিরেছেন, চুঁচুড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার।