কলকাতা: রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা  সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা। রাজ্যের রাজনৈতিত মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।  দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের স্মৃতিচারণে উঠে এল পরিহাসপ্রিয়, মেধাবী, কর্মদক্ষ এক রাজনীতিবিদের কথা। আগামীকালই ভাইফোঁটা।  সেই কথা মনে করে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দুই বোনের চোখের জল বাঁধ মানছে না।  দাদার কথা তাঁদের মুখেও। অভিভাবকসম দাদাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁরা।


রাত পোহালেই ভাইফোঁটা। কিন্তু এবার তাতে পূর্ণচ্ছেদ পড়ে গেল। নাড়ু খেতে চেয়েছিলেন বোনের কাছে। খাওয়ার কথা ছিল ভাইফোঁটার দিনই। রাখা আছে সেই নাড়ু, শুধু দাদা আর নেই।অভিভাবক দাদাকে হারিয়ে শোক-বিহ্বল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোনেরা।


প্রয়াত নেতার এক বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় বললেন, দাদা মজা করতে খুব ভালোবাসত। ভাইফোঁটা ও জন্মদিন আমার বাড়িতেই হত। দাদার সঙ্গে মজাটাই ছিল বড় পাওনা। কী কী খাবে জিজ্ঞাসা করে নিতাম।  যে যে খাবার খেতে চাইত, সেগুলো রান্না হত। আমরা নিজেরাই রান্না করতাম। রাত একটাতেও আমরা বিজয়া করতে দাদার বাড়িতে এসেছিলাম সব ভাই-বোনরা। এভাবেই ভাইবোনদের সঙ্গে হৈচৈ করতে ভালোবাসতেন প্রয়াত নেতা। 


সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় বললেন, ভাইফোঁটার আগের দিন বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তিন-বোন কাছে পিঠেই থাকি। ঠিক করেছিলাম, এবার দাদাকে ফোটাঁ দিয়ে চলে আসব। পরে খাওয়াব। পোস্তর বড়া, মাছের টক, এই সব খেতে পছন্দ করত দাদা। আসলে দাদা সাবেক খাওয়া ভালোবাসত। 


কান্না জড়ানো গলায় তিনি বললেন, এখন তো সবটাই স্মৃতি হয়ে গেল। পিতৃহারা হলাম আমরা।  দাদার ভালোবাসা-বকুনি-শাসন  সমস্ত কিছুই এখন অতীত। 


উল্লেখ্য, দীপাবলির রাতে এসএসকেএমে প্রয়াত হন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। স্টেন্ট বসানোর পরেও অবস্থার অবনতি হয়। গতকাল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বর্ষীয়ান রাজনীতিকের।


সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আর এর বোন বুলবুল চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, লক্ষ্মীপুজোর পরে নাড়ু খেতে চেয়েছিল। রাখা আছে কৌটো ভর্তি নাড়ু। কিন্তু তার আগেই চলে গেল দাদা। কাল সাড়ে চারটের সময় কথা হয়েছে। বলল ভাল আছে।  যেতে সন্ধে হয়ে যাবে। তুই পরের দিন এসে ফোঁটা দিস। তারপরেই মারা গেল।