আশাবুল হোসেন, এবিপি আনন্দ: ১৯ তারিখেই পশ্চিমবঙ্গের ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস সংক্রান্ত মামলার রায় দেয় হাইকোর্ট। সেই পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ নিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করেছে । দু’দলকেই কটাক্ষ করেছে সিপিএম।


রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায়, খুন, ধর্ষণ বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো ঘটনার ক্ষেত্রে, CBI তদন্ত করবে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরেই সক্রিয় হয়েছে CBI। আর সেদিনই ভোটের পর যে নন্দীগ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছিল, সেখানে দাঁড়িয়ে হাইকোর্টের CBI তদন্তের নির্দেশকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী।


বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, দেবব্রত মাইতির খুনিরা কেউ ছাড়া পাবে না। যেখানে যাওয়ার কথা সেখানেই যাবে। যারা ষড়যন্ত্রকারী, পুলিশ যারা ঘুমিয়ে ছিল, তাদেরও একই অবস্থা হবে।


পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ সুফিয়ান জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী কি CBI? যে তিনি এই ধরনের কথা বলছেন। মাহামান্য হাইকোর্টের উপর ভরসা আছে। শুভেন্দু বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তার কি হবে?


হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে হাতিয়ার করেছে তৃণমূলও! বিচারপতি সৌমেন সেন বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণে বলেন, কমিটির রিপোর্টে কিছু কঠোর মন্তব্য করা হয়েছে। কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও আমি মনে করি, এই ধরনের বক্তব্য ও সুপারিশ অযৌক্তিক এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে তা সীমা লঙ্ঘনের সামিল।
গ্রাফিক্স আউট


রাজীব জৈন, রাজুল বেন দেসাই, আতিফ রশিদের মতো জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তৈরি করে দেওয়া প্রতিনিধি দলের সদস্যদের বিজেপি-যোগের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা পেশ করেছিল রাজ্য সরকার।


বিচারপতি সৌমেন সেন নিজের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, রাজীব জৈন, রাজুল বেন দেসাই ও আতিফ রশিদের কমিটির সদস্য হওয়া, রিপোর্টকে কোনওভাবে বিকৃত করেছে বলে আমি মনে করি না। যদিও রাজুল বেন দেসাই, আতিফ রশিদের কমিটিতে মনোনয়ন এড়ানো যেত।
গ্রাফিক্স আউট


পাশাপাশি এই রিপোর্টকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট বলতেও চাননি বিচারপতি। আর এই পর্যবেক্ষণকেই হাতিয়ার করছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, আমাদের যা অভিযোগ ছিল, বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণে সেই বিষয়টিই তো সামনে আসছে।


বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলছেন, সিবিআই ঢোঁড়া সাপ নয়, কেউটে সাপ। একবার ছোবল মারলে বুঝতে পারবেন, সারা জীবন মনে থাকবে। সেই জন্য আপনাদের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত-অত্যাচারী নেতা, সিবিআই তাঁদের ঠিক জায়গায় নিয়ে যাবে। তৃণমূল-বিজেপি দু’দলকেই কটাক্ষ করেছে সিপিএম।


সুজন চক্রবর্তী জানান, এর থেকেই স্পষ্ট বিজেপি সিবিআইকে তোতাপাখির মতো ব্যবহার করে। আমাদের প্রশ্ন সারদা-নারদায় কেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল না?সব মিলিয়ে CBI’এর সক্রিয়তার সঙ্গেই, বাড়ছে রাজনৈতিক তরজা।