বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি: ইডির দিল্লি তলবের সমন খারিজ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের শুনানি স্থগিত হয়ে গেল। রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচের আর্জির বিরোধিতা করে ইডি। বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানি। 


সপ্তমীর দিন, রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সশরীরে হাজিরা দিতে, নির্দেশ দিয়েছে পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। এই প্রেক্ষাপটে ইডি-র সমনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, দিল্লি হাইকোর্টে মামলার শুনানি, ফের স্থগিত হয়ে গেল।


এদিন ভার্চুয়াল শুনানিতে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সিদ্ধার্থ আগরওয়াল বিচারপতি যোগেশ খান্নার উদ্দেশে বলেন, ED-র কলকাতায় অফিস আছে। সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু পাল্টা বলেন, ED যেখানে খুশি ডেকে পাঠাতেই পারে। রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রশ্ন তোলেন, শুনানি চলাকালীন ED একের পর নোটিস পাঠাচ্ছে। এক ঘণ্টারও বেশি ধরে চলে শুনানি। 


কপিল সিব্বল আবেদনে বলেন, দিল্লি হাইকোর্টের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত, অন্তর্বর্তীকালীন রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা পাল্টা যুক্তি দেন, তাঁদের ডাকা সত্ত্বেও না আসায়, পদক্ষেপ নিয়েছে ED। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে আদালত জানায়, ৬ অক্টোবর অর্থাৎ, বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।


সম্প্রতি কয়লাকাণ্ডে পাতিয়ালা হাউস কোর্ট জানিয়ে দেয় সশরীরে হাজিরা দিতেই হবে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। হাজিরাতে ছাড় চেয়েছিলেন রুজিরা, তাতে অনুমোদন দেয়নি না আদালত। ১২ অক্টোবর সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয় রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।


গতকাল ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজিরা দেন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড-আবহে ছোট বাচ্চাদের ছেড়ে আসতে পারবেন না দিল্লিতে, তাই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজিরা, আদালতে জানান রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির দাবি জানিয়েছেন ইডি-র আইনজীবী। 


এর আগে গত মঙ্গলবার কয়লাকাণ্ডে দিল্লি হাইকোর্টে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলার শুনানি ছিল। আর এদিন সেই সমন খারিজ মামলাতেই ওঠে নারদকাণ্ডে কলকাতায় তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতামন্ত্রীদের গ্রেফতারি প্রসঙ্গ। গ্রেফতারের পর CBI অফিসে মুখ্যমন্ত্রীর পৌঁছে যাওয়ার প্রসঙ্গও টেনে আনেন সলিসিটার জেনারেল। 


এর আগে এই মামলায় তদন্তে সহযোগিতার কথা জানিয়ে, অভিষেক ও রুজিরার আইনজীবী কপিল সিব্বল দাবি করেন, ' তাঁরা শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জায়গা নিয়ে আবেদন করছেন, অন্য কিছু নয়। ইডি চাইলে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রীকে কলকাতায় কিংবা ভার্চুয়ালিও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। ' এদিন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যোগেশ খান্নার এজলাসে শুনানির শুরুতেই, এ প্রসঙ্গে ED-র বক্তব্য জানতে চান বিচারক।


উত্তরে সলিসিটার জেনারেল বলেন, ' তাঁরা সমনকে চ্যালেঞ্জ করছেন, আবার বলছেন, তদন্ত থামাতে চাইছেন না? ' উত্তরে অভিষেক-রুজিরার আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ' অভিযুক্ত হিসেবে, না সাক্ষী হিসেবে সমন করা হচ্ছে, সেটাই তাঁর মক্কেলরা জানেন না। আপনারা বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। আমরা আপনাদের তদন্তের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করছি না। এমনকি মক্কেলদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ থাকলে, আপনি গ্রেফতারও করতে পারেন। আমি গ্রেফতারি এড়াতে কোনও রক্ষাকবচ চাইছি না। '