কলকাতা: দীর্ঘদিনের সু-সম্পর্ক। মাঝে রাজনৈতিক কারণে কিছু বছরের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল মুখ্য়মন্ত্রী আর মুকুলের পরিবারের। তবে টান আজও সেই একই রকম। মুকুল রায়ের স্ত্রী-এর মৃত্যুর পর তাঁদের বাড়ি এসে সে কথাই ফের মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


মঙ্গলবার মুকুল রায়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মমতা বললেন, 'মুকুল আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী। ওর স্ত্রীকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, ওদের বাড়িতেও আমি যেতাম। মা বেঁচে থাকাকালীনও আমাদের কথা হয়েছে। সবাই ভেবেছিলাম হয়ত সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু সবরকম চেষ্টা করার পরেও কিছু করা গেল না।'


পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, আগামিকাল সকাল ৭টায় চেন্নাই থেকে মায়ের মৃতদেহ ফিরবেন মুকুল পুত্র। এরপর এখানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে তাঁর। এদিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে পৌঁছন মমতা। সেখানে প্রায় আধ ঘণ্টা ছিলেন তিনি। মুকুল রায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন। সেখান থেকে বেরোনোর সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 


মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যু হয় মুকুল রায়ের স্ত্রী কৃষ্ণা রায়ের। পরিবার সূত্রে খবর, আজ ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আগামিকাল দেহ নিয়ে আসা হবে কলকাতায়। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মুকুল রায়ের স্ত্রীকে ১১ মে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভেন্টিলেশনে থাকার পর ২ সপ্তাহ একমো সাপোর্টে ছিলেন তিনি। এরপর ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় চেন্নাই। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়।


কৃষ্ণা রায়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তৃণমূল নেতারা সল্টেলেকে মুকুল রায়ের বাড়িতে আসেন। মুকুলের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুজিত বসু। এরপর বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেকে মুকুল রায়ের বাড়িতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। 


সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন মুকুল রায়। এর আগে অসুস্থ মুকুল-জায়াকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে অভিষেকের বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছিল। শুভ্রাংশুর সঙ্গে অভিষেক চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন তিনি। সেদিন হাসপাতালে প্রায় ১৫ মিনিট ছিলেন অভিষেক।


এ প্রসঙ্গে শুভ্রাংশু রায় বলেছিলেন,'অভিষেক বা তাঁর বাড়ির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আজকের নয়, দীর্ঘদিনের। অভিষেক  আমার মা'কে সম্মান দেয়। যখন দেখা হয় মায়ের খবর নেয়। এই সৌজন্যতা ভারতের রাজনীতিতে অন্য মাত্রা নিয়ে যাবে। ও যা করেছে, রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে করেছে।'