সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও পার্থপ্রতিম ঘোষ,কলকাতা: অস্ত্রের বৈধ দোকান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ কার্তুজ কীভাবে দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছচ্ছে? খতিয়ে দেখছে রাজ্য পুলিশের STF. এদিন বিবাদীবাগের দোকানের ধৃত ২ কর্মচারীকে নিয়ে দোকানে হানা দেন তদন্তকারীরা। মিলিয়ে দেখা হয় নথি।
অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতে তৈরি কার্তুজ বৈধ দোকান থেকে চলে যাচ্ছে বেআইনি অস্ত্র কারবারিদের কাছে! বিবাদী বাগের অস্ত্র বিপণী থেকে বেআইনিভাবে বিক্রি হয়েছে বন্দুকও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় প্রায় ২০০টি কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই বিস্ফোরক ও চাঞ্চল্য়কর তথ্য হাতে এসেছে বলে রাজ্য পুলিশের STF সূত্রে খবর।
STF সূত্রে দাবি, প্রায় একবছর ধরে দোকান থেকে পাচার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি। এখন প্রশ্ন হল, সেগুলো কোথায় কোথায় পৌঁছে গেছে? উত্তর খুঁজছে রাজ্য পুলিশের STF.এদিন সকালে ফের বিবাদী বাগের বৈধ অস্ত্র বিপণীতে হানা দেয় পুলিশ। কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত দোকানের ২ কর্মীকে নিয়ে এদিন শতাব্দী প্রাচীন অস্ত্রের দোকানে তল্লাশি করেন তদন্তকারীরা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ১৫ তারিখ ভোরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এবং উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় বেঙ্গল STF.
তল্লাশিতে উদ্ধার হয় - ১৯০টি তাজা 7.65mm পিস্তলের কার্তুজ। পাশাপাশি, উদ্ধার হয় ১৩টি বারো বোরের কার্তুজ এবং দু'টো ডাবল ব্যারেল বন্দুক। আশিক ইকবাল গাজি ওরফে বাপ্পা , আব্দুল সেলিম গাজি ওরফে বাবলু, হাজি রশিদ মোল্লা, জয়ন্ত দত্ত , ফারুক মল্লিক , শান্তনু সরকার। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জনকে। এঁদের মধ্যে জয়ন্ত দত্ত ও শান্তনু সরকার বিবাদী বাগের অস্ত্র দোকানের কর্মী।
পুলিশ সূত্রে দাবি, অস্ত্রের দোকানের 'স্টক রেজিস্টার' দেখভালের দায়িত্ব ছিল শান্তনুর ওপর। এবং তাঁর সঙ্গে আঁতাঁত ছিল জয়ন্তর। শান্তনুর কাছ থেকে বেআইনিভাবে 'ডবল ব্যারেল গান' কিনেছিলেন ধৃত হাজি রসিদ মোল্লা। ছোট ছোট অংশে তা সরবরাহ করা হয়। দোকান থেকে একটি কার্তুজও বাইরে গেলে যেখানে হিসেব থাকার কথা, সেখানে এত গুলি ও বন্দুক কীভাবে চোরাপথে বাইরে গেল? বিক্রি হওয়া অস্ত্র ও গুলির বৈধ কাগজপত্র আছে কি? তা জানতে, দোকানেরই দুই কর্মীকে নিয়ে এদিন দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। খতিয়ে দেখে নথি।
আরও পড়ুন, দুই দেশের অস্থিরতার মধ্যেই সারলেন বিয়ে, বাংলাদেশ থেকে ভারতের পুত্রবধূ হয়ে এপারে এলেন সঞ্চিতা
STF-এর গোয়েন্দাদের বক্তব্য়, বিবাদী বাগে অস্ত্রের দোকানের নামে ইস্যু করা বুলেট সরকারি নিয়ম মেনে কেবলমাত্র লাইসেন্সধারী অস্ত্রের মালিকদের কাছে বিক্রি করার কথা। কিন্তু অভিযোগ, তার একাংশ চলে গেছে বেআইনি অস্ত্র কারবারিদের কাছে। সেখান থেকে দুষ্কৃতীদের হাতে। এই প্রেক্ষিতে তদন্তকারী আধিকারিকদের স্ক্যানারে রয়েছে অস্ত্রের দোকানের স্টকবুক। এবং দোকানের দুই কর্মী।