কলকাতা:  শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটের ডাক দিলেও, অশান্তি এড়ানো গেল না। আন্দোলনের জেরে ধুন্ধুমার চেহারা নেয় শিয়ালদা চত্বর।  প্রথমে মৌলালি মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। পরে রাস্তা আটকে শুরু হয় বিক্ষোভ। 


খানিক পরে মিছিল এগোয় কলেজ স্ট্রিটের দিকে। এন্টালির কাছে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। ঝাণ্ডার লাঠির বাড়ি মেরে ভেঙে ফেলা হল গাড়ির কাচ। বাস আটকানোর চেষ্টা করা হয়। গাড়ির বনেটে উঠে পড়েন কংগ্রেস সমর্থকরা। শিয়ালদার কাছে মহাত্মা গান্ধী রোডে জোর করে দোকান বন্ধ করে দেন ধর্মঘটীরা।


মিছিল থেকে বেরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সুজন চক্রবর্তী। যদিও তাঁর দাবি, কোনও ভাঙচুর করা হয়নি। এদিন বাম পরিষদীয় দলনেতা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল হচ্ছে, কয়েক হাজার মানুষ রয়েছে, গতকাল যেভাবে পুলিশ করেছে প্রতিক্রিয়া তো থাকেই, কয়েকজন দোকানে গিয়েছিল, আমি নিজে গিয়ে সরিয়ে নিয়ে এসেছি- এটা আমরা করি না, কাল পুলিশ যেটা করেছে প্রভোকেশন, আমি বলেছি প্রভোকেশনে পা না দিতে। কংগ্রেসের যে চারপাঁচজনকে পতাকা হাতে দেখা গিয়েছে, বারণ করেছি। ভাঙচুর কোথাও হয়নি।


মোটরবাইকে চড়ে কর্মী, সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন আব্দুল মান্নান। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা হবে কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন। বলেন, দু-তিনজন করেছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ বাঁদরামি করলে নিশ্চয় জানতে হবে! শান্তিপূর্ণ মিছিল হচ্ছে। আমরা কোনও গোলমাল করিনি। কেউ ভয়ে দোকান বন্ধ করলে অন্য কথা। যারা ঝামেলা করেছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কী করব? ফাঁসি দিয়ে দেব?


বামেদের নবান্ন অভিযানে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে আজ ১২ ঘণ্টার ধর্মঘট সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। ধর্মঘট ঠেকাতে তৎপর প্রশাসন। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চলছে নজরদারি।


সবার জন্য শিক্ষা, নতুন শিল্প ও চাকরির দাবিতে ১০টি বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের নবান্ন অভিযান ঘিরে গতকাল ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। 
বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করতেই, লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় জল কামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। এরপরই পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ১২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয় বামেরা।