রুমা পাল, শিবাশিস মৌলিক ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা : শনিবার রাজ্য়ের ৬ টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ। তার আগে, নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গণনাকেন্দ্রের ২০০ মিটার এলাকা। থাকছে ত্রিস্তরীয় গণনা। গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। এদিন বাংলা-সহ ১৫টি রাজ্য়ের ৪৮টি বিধানসভা কেন্দ্র ও ২টি লোকসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের ফলও ঘোষণা হবে। এছাড়াও মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনেরও ফল ঘোষণা শনিতেই। 


২৩ নভেম্বর, শনিবার। রাজ্য়ের ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ হতে চলেছে। নৈহাটি, হাড়োয়া , মেদিনীপুর, তালডাংরা, সিতাই ও মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটের রেজাল্ট আউট। এই ছয় আসনের বিধায়করা গত লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়েছেন। ফলে, তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্রগুলি বিধায়কশূন্য় হয়ে পড়েছে। যেমন পার্থ ভৌমিক ব্য়ারাকপুরের সাংসদ হয়ে যাওয়ায়, বিধায়কশূন্য় নৈহাটি। তেমনই, জুন মালিয়া মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে জয়ী হওয়ায়, মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্র বিধায়কহীন পড়েছে। তালড্য়াংরার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী, বর্তমানে সাংসদ। সিতাইয়ের বিধায়ক ছিলেন জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। গত লোকসভা ভোটে জিতে, বর্তমানে তিনি কোচবিহারের সাংসদ। একইভাবে, মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা, এবার আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হয়েছেন। ফলে, মাদারিহাট কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। তবে, বসিরহাটের সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে। হাড়োয়া আসনের বিধায়ক পদ ছেড়ে তিনি সাংসদ হয়েছিলেন। 


যে ৬টি বিধানসভা আসনে ভোট হয় তার মধ্য়ে গতবার ৫টিতে জিতেছিল তৃণমূল। শুধুমাত্র মাদারিহাট ছিল বিজেপির দখলে। লোকসভা ভোটেও বিধানসভার সমীকরণটা খুব বেশি বদলায়নি। লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফল অনুযায়ী, নৈহাটিতে, তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ব্য়বধান, প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার। হাড়োয়ায় তৃণমূল এগিয়ে ছিল ১ লাখের বেশি ভোটে। মেদিনীপুরে অবশ্য় তৃণমূলের থেকে মাত্র ২ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল বিজেপি।  তালডাংরায় তৃণমূল এগিয়ে ছিল প্রায় সাড়ে ৮ হাজার ভোটে। সিতাইয়ে ব্য়বধানটা ২৮ হাজারেরও বেশি। মাদারিহাটে অবশ্য় তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে ছিল বিজেপি। 


ইতিমধ্য়েই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গণনাকেন্দ্রের ২০০ মিটার এলাকা। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ২০০ মিটার পর্যন্ত জারি থাকবে নতুন ধারা অনুযায়ী ১৬৩ ধারা। থাকছে ত্রিস্তরীয় গণনা। গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। প্রথম স্তরে থাকছে রাজ্য় পুলিশ। দ্বিতীয় স্তরে, রাজ্য় পুলিশের সঙ্গে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। আর তৃতীয় বা শেষ স্তরে থাকবেন শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। গণনাকেন্দ্রের ভিতরে থাকছে CCTV। গণনাকেন্দ্রের ভিতর থেকে কোনওরকম ওয়েবকাস্টিং হবে না। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে গণনা হবে পোস্টাল ব্য়ালট। তারপর, শুরু হবে EVM কাউন্টিং। প্রত্য়েকটি স্ট্রংরুম পাহারায় আছে ১ প্ল্য়াটুন কেন্দ্রীয় বাহিনী। অর্থাৎ, ২৪ জন জওয়ান। সিতাইয়ের গণনাকেন্দ্র দিনহাটা কলেজ। মাদারিহাটের, আলিপুরদুয়ার ইন্ডোর স্টেডিয়াম। নৈহাটি বিধানসভার উপনির্বাচনের গণনাকেন্দ্র বঙ্কিমঞ্জলি স্টেডিয়াম। হাডোয়ার হাড়োয়া পিজি হাই স্কুল । মেদিনীপুর কেন্দ্রের গণনাকেন্দ্র, মেদিনীপুর কলেজ। এবং, তালডাংরার সিমলাপাল মদনমোহন হাই স্কুল ।


দেশজুড়েও কোথায় কোথায় ভোটের ফল ?


মহারাষ্ট্রে মোট বিধানসভা আসন ২৮৮টি। ম্য়াজিক ফিগার - ১৪৫। মহারাষ্ট্রে এ বার মূলত দ্বিমুখী লড়াই। এক দিকে বিজেপি, শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠী এবং এনসিপির অজিত গোষ্ঠীর জোট। অন্য দিকে কংগ্রেস, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা এবং শরদ পাওয়ারের NCP-র জোট। পাশাপাশি কিছু ছোট আঞ্চলিক দলও রয়েছে। 


অন্য়দিকে, ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে লড়াই মূলত দ্বিমুখী। এক দিকে কংগ্রেস-ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার 'INDIA'। অন্য়দিকে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন 'NDA'। ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট আসন ৮১ । ম্য়াজিক ফিগার ৪১


পাশাপাশি, শনিবার, কেরলের ওয়েনাড লোকসভা কেন্দ্রেরও ভোটের ফল প্রকাশ। এবারের লোকসভা ভোটে, রাহুল গান্ধী রায়বরেলি এবং ওয়েনাড দু'টি আসনেই জয়ী হন। তারপর রায়বরেলি রেখে ওয়েনাড ছেড়ে দেন তিনি। এই আসনে প্রার্থী হন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। এবারই প্রথমবার ভোটের লড়াইয়ে তিনি। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী কি পারবেন রাহুল গান্ধীর জেতা আসন ধরে রাখতে ?


মহারাষ্ট্র কি বিজেপি জোট ধরে রাখতে পারবে? না কি কংগ্রেস-উদ্ধব ঠাকরে ও শরদ পাওয়ারের জোট ক্ষমতা ছিনিয়ে নেবে? ঝাড়খণ্ডে 'I.N.D.I.A' জোটকে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে ক্ষমতা দখল করবে বিজেপি? কী হবে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা উপ নির্বাচনে যোগী আদিত্য়নাথের সঙ্গে অখিলেশ যাদবের লড়াইয়ে? 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।