সৌভিক মজুমদার, হিন্দোল দে, কলকাতা: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০১ তম জন্মবার্ষিকীতে ট্যুইট করে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘জন্মবার্ষিকীতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধার্ঘ্য। তিনি ছিলেন বড়মাপের সমাজ সংস্কারক। ন্যায় ও সমানাধিকারের জন্য নিরলস লড়াই চালিয়েছেন। আমরা তাঁর কাছে ঋণী।’


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ও ট্যুইট করে বিদ্য়াসাগরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলা নবজাগরণের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁর অনুপ্রেরণামূলক ভাবনাচিন্তার মাধ্যমে সামাজিক কুপ্রথাকে ধ্বংস করেছিলেন। প্রগতিশীল, শিক্ষিত সমাজ গড়ে তোলার জন্য তিনি আজীবন চেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি ছিলেন মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের প্রবল সমর্থক। বর্ণবৈষম্যের প্রবল বিরোধিতা করেছেন। জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই।’


আজ কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর দুই সদস্য অতীন ঘোষ ও দেবাশিস কুমার।


এদিন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির উদ্যোগে ধর্মতলার রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ পার্কে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।


২০১৯-এর ১৪ মে অমিত শাহের রোড শো ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে কলেজ-স্ট্রিট, বিধান সরণি চত্বর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার আগে ঢিলছোড়া দূরত্বে থাকা বিদ্যাসাগর কলেজের সামনেও শুরু হয় অশান্তি। যা ক্রমশঃ ভয়ঙ্কর চেহারা নেয়। কলেজে ভাঙচুর চলে। বাঁশ নিয়ে চলে হামলা। ছোঁড়া হয় ইট, পাথর। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বিদ্যাসাগরের মূর্তি। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় মোটরবাইক। 


এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। গোটা ঘটনার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেন অমিত শাহ। পাল্টা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা নিয়ে হুঙ্কার দেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিজেপি দাবি করে, রোড শো আটকাতে না পেরে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে মিছিলে হামলা চালানো হয়েছে। পাল্টা রোড শোয়ের অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলনেত্রী।


এই প্রতিবাদস্বরূপ টুইটারে ডিপি বদল করে বিদ্যাসাগরের ছবি দেন মমতা। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ডিপি বদল করে তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের অফিসিয়াল টুইটার পেজেও একইভাবে ডিপি বদল করা হয়। ডিপি বদল করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায় সহ দলের একাধিক শীর্ষ নেতা। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও এই ঘটনা ইস্যু হয়ে ওঠে। বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করে তৃণমূল কংগ্রেস।