কলকাতা : ৮০ জন রোগী ভর্তি, হাতে মাত্র ১ঘণ্টার অক্সিজেন ! উত্তর ভারতের পর এবার অক্সিজেন সঙ্কট বাংলাতেও। অক্সিজেন সঙ্কটে মানিকতলার জেএন রায় হাসপাতাল। হাসপাতালের ৮০জন রোগীর মধ্যে ৫০জন করোনা আক্রান্ত। কীভাবে পরিস্থিতি সামাল? অনিশ্চয়তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কোথাও অক্সিজেনের জন্য কাতরাচ্ছেন রোগীরা । কোথাও অক্সিজেন না পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ার অভিযোগও রয়েছে। কোথাও একটা মাত্র অক্সিজেনের সিলিন্ডার পেতে পড়েছে লম্বা লাইন। ভাগ্যের জোরে সিলিন্ডার পেলেও, তা নিয়ে যেতে হচ্ছে ঠেলে ঠেলে!
দিল্লি-সহ দেশের একাধিক জায়গায় করোনার বিপদের মধ্যেই শুরু হয়েছে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার! এবার আতঙ্কের এই পরিস্থিতি তৈরি হল বাংলাতেও! মানিকতলার জেএন রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শনিবার সন্ধে ছটা নাগাদ তাদের কাছে আর ১ ঘণ্টার মতো অক্সিজেন ছিল। সেইসময় হাসপাতালে ৮০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে ৫০ জনই করোনা আক্রান্ত!
বাংলায় যখন এই ছবি, তখন দিল্লির অবস্থা আরও ভয়াবহ! দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধুমাত্র অক্সিজেনের অভাবের কারণে শুক্রবার রাতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। মৃতসরের নীলকান্ত হাসপাতালে, অক্সিজেনের অভাবে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
অক্সিজেনের আকাল দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালেও।অক্সিজেন সরবরাহ ঠিকঠাক হচ্ছে না বলে অভিযোগ, দিল্লির লোক নায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এই প্রেক্ষাপটে অক্সিজেনের অভাব নিয়ে মহারাজা অগ্রসেন ও বাটরা হাসপাতালে দায়ের করা মামলার শুনানিতে শনিবার দিল্লি হাইকোর্ট কড়া বার্তা দিয়ে বলে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে গাফিলতি দেখলে কেন্দ্র, রাজ্য বা স্থানীয় স্তরের কোনও অফিসারকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না। অক্সিজেন সরবরাহে কারা বাধা দিচ্ছে, একবার বলুক দিল্লি সরকার। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের ফাঁসিতেও ঝোলানো হবে।
শনিবার অক্সিজেন সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, অক্সিজেনের দাম কমাতে সিলিন্ডারে আমদানি শুল্ক ও হেলথ সেসে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আপাতত তিন মাস এই ছাড় বলবৎ থাকবে।
এদিনই দিল্লির গঙ্গারামপুর ও বাটরা হাসপাতালে পৌঁছয় অক্সিজেনের ট্যাঙ্কার। লখনউয়ে পৌঁছেছে অক্সিজেন এক্সপ্রেস। চাহিদা মেটাতে এবার আকাশপথে সিঙ্গাপুর থেকে আনা হচ্ছে অক্সিজেন। গাজিয়াবাদের হিন্দান এয়ারবেস থেকে বায়ুসেনার বিমান পৌঁছয় সিঙ্গাপুরে।অন্যদিকে বায়ুসেনার আরও একটি সি-১৭ বিমান পুণে থেকে অক্সিজেন নিয়ে গেল গুজরাটের জামনগরে।
অক্সিজেন সিলিন্ডার না মেলায়, ব্যাপক হারে চাহিদা বেড়েছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর্সের। এই পরিস্থিতিতে, আমেরিকাকে দশ হাজার অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটারের বরাদ দিয়েছে ভারত। পরের সপ্তাহ থেকেই তা আসা শুরু করবে বলে সূত্রের খবর।