নয়াদিল্লি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) কর্মসূচির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ, বিক্ষোভে অশান্তি, মারদাঙ্গার নিন্দায় মুখ খুললেন সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। অশান্তি, হিংসা, প্রাণহানির জন্য বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কর্মসূচির পিছনে থাকা নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন তিনি। বলেছেন, নেতৃত্ব মানে লোকজনকে হিংসার রাস্তায় চালনা করা নয়।
গত কয়েকদিনের এনআরসি, সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ, বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি অশান্তি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। গাড়ি, বাইকে আগুন, থানায় হামলা, পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, গুলিচালনা-নির্বিচার হিংসায় সেখানে একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশের একাধিক কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে হামলার অভিযোগ উঠেছে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। তবে বিক্ষোভ হয়েছে শান্তিপূর্ণ পথেও। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে শাসক শিবিরের লোকজন হিংসা, অশান্তির পিছনে কংগ্রেস সহ বিরোধীদের উস্কানি, প্ররোচনা, ইন্ধন থাকার অভিযোগ করেছেন। সেনাপ্রধান কোনও রাজনৈতিক নেতা, দলের নাম করেননি, তবে বলেছেন, যারা জনগণকে বিপথে চালায়, তারা নেতা নয়। আমরা একাধিক কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ দেখছি। ছাত্ররা রাস্তায় নামছে। কিন্তু যেভাবে কিছু লোকজন শহরে, মহল্লায় লোকজনকে হিংসা ছড়িয়ে লুঠপাটে ইন্ধন, নেতৃত্ব দিয়েছে, তাকে নেতৃ্ত্ব বলে না।
৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান পদে অবসর নিচ্ছেন তিনি। তার আগে এক অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব সম্পর্কে নিজের ব্যাখ্যা দিয়ে জেনারেল রাওয়াত বলেছেন, নেতৃত্ব মানে যদি সামনে থাকা হয়, তাহলে সেটা কেন এত জটিল ব্যাপার? কারণটা হল, নেতাকে সবাই অনুসরণ করেন। তাই নেতৃত্ব দেওয়া সহজ মনে হলেও বাস্তবে তা নয়। এটা একটা জটিল বিষয়।


যদিও রাওয়াতের মন্তব্যের বিরোধিতা করে তাঁকে কটাক্ষ করে হায়দরাবাদের সাংসদ এএইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি ট্যুইট করেছেন, কারও নিজের পদের এক্তিয়ারের সীমারেখাটা জানাই নেতৃত্ব। এর মানে সাধারণ অসামরিক মানুষজনই যে সর্বশক্তিমান, এটা উপলব্ধি করা ও আপনি যে প্রতিষ্ঠানের মাথায় আছেন, তার মানমর্যাদা, সততা রক্ষা করা।