নয়াদিল্লি: মান্ধাতা আমলের জিনিস। ব্যবহার বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহুদিন। কিন্তু মানুষ মারা অস্ত্র হিসেবে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে পেজারের। এমনকি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কাজে ব্যবহৃত ওয়াকি-টকি, এমনকি ল্যান্ডলাইন ফোনও হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। লেবাননে পর পর বিস্ফোরণের ঘটনায় ইজরায়েলের হাত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সরাসরি কিছু না বললেও, 'যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছে' বলে মন্তব্য করেছে তারা। সাধারণ মানুষের জীবনে এই ঘটনা মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। (Lebanon Pager Explosions Possible Impacts)
লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হেজবোল্লাকে লক্ষ্য করে ইজরায়েল পেজার এবং ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। একসঙ্গে ৩০০০ পেজার বিস্ফোরণ ঘটে প্রথমে, তার পর কয়েকশো ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ ঘটে। বাড়ির মধ্যে ল্যান্ডলাইন ফোনে বিস্ফোরণ ঘটার খবরও সামনে এসেছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা ওই সমস্ত সামগ্রীতে আগে থেকে ইজরায়েল বিস্ফোরক ঢুকিয়ে দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। (Lebanon Walkie-Talkie Explosions)
এই ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। পেজার, ওয়াকি-টকি, ফোনকে যদি মানুষ মারার কাজে ব্যবহার করা হয়, সেক্ষেত্রে গোটা বিশ্বকে সারাক্ষণ প্রাণভয়ে থাকতে হবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ইতিমধ্যেই। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ার বাইরে রোজকার জীবনে বড় পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
এক্ষেত্রেই প্রথমেই বিমান পরিষেবার কথা উঠে আসছে। বিমানে ওয়াইফাই ব্যবহার করার চল রয়েছে। একসময় কিছু বিমানে বিশেষ একটি সংস্থার ফোন নিষিদ্ধ ছিল। সেই ফোন তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায় বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বর্তমানেও কার্গো লিথিয়াম ব্যাটারি রয়েছে এমন কিছু নিয়ে বিমানে ওঠায় বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয় বিমানে। সেই নিয়েই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
হেজবোল্লার হাতে পৌঁছনো পেজ এবং ওয়াকি-টকিতে যদি বিস্ফোরণ ঘটানো যায়, তাহলে আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলিতে এর পুনরাবৃত্তি হবে না, তা কে বলতে পারে বলে উঠছে প্রশ্ন। সিগনালের মাধ্যমে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি গরম করে যদি আস্ত বিমান উড়িয়ে দেওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ব্যয়সাপেক্ষ ক্ষেপণাস্ত্র, পরমাণু বোমার প্রয়োজন আগামী দিনে আর পড়বে না বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
লেবাননে পর পর পেজার এবং ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণের ঘটনায় আগামী দিনে বিমানে মোবাইল ফোন এবং কম্পিউটার ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা হতে পারে। বিমানে নিজের আসনে বসে ব্যবহার করা তো দূর, মালপত্র রাখার জায়গায় সেগুলি তোলা নিয়েও আপত্তি উঠতে পারে। তাই শুধু হেজবোল্লাকে নিশানা করে এই হামলা চালানো হয়নি, এই হামলার পর বিমান পরিষেবার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শুধু বিমান পরিষেবাই নয়, যে কোন গণপরিবহণের মাধ্যমেই মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়ে ওঠা বন্ধ হবে কি না, উঠছে প্রশ্ন।