নয়া দিল্লি : 'আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশ থেকে মুছে ফেলা হবে অতি বামপন্থা (Left Wing Extremism)।' চরম বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। মাওবাদী-অধ্যুষিত এলাকার নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার জন্য শুক্রবার একটি বৈঠক করেন তিনি। শাহ বলেন, 'গত চার দশকের মধ্যে ২০২২ সালে নকশাল- অধ্যুষিত এলাকায় সবথেকে কম হিংসা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। মানবতার কাছে অভিশাপ এই মাওবাদ। যা যে কোনওভাবে নির্মূল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।'
২০১০ সালের তুলনায় ২০২২ সালে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় হিংসার ঘটনা কমে গেছে প্রায় ৭৭ শতাংশ। এমনই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এই পরিস্থিতিতে অতি বামপন্থী-প্রবণ মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীরা আজ শাহি-বৈঠকে যোগ দেন। মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশও ছিলেন সেখানে। তবে, ওড়িশা, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীদের পরিবর্তে রাজ্যের মন্ত্রীরা বৈঠকে সামিল হয়েছিলেন।
২০১৫ সালে অতি বামপন্থীদের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় নীতি ও কার্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে কেন্দ্র। আধিকারিকরা বলছেন, নীতিটি নিরাপত্তা-সম্পর্কিত ব্যবস্থা, উন্নয়নে হস্তক্ষেপ, স্থানীয় সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিতকরণ ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত একটি বহুমুখী কৌশলের কথা বলেছে। তাই এই নীতির সফল প্রয়োগের মাধ্যমেই গোটা দেশজুড়ে মাওবাদী হিংসার ঘটনা কমিয়ে আনা গেছে।
তাঁদের আরও দাবি, ২০১০ সালের তুলনায় ২০২২ সালে মাওবাদী হিংসায় নিরাপত্তাকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে যে তথ্য তৈরি করা হয়েছে সেই অনুয়ায়ী, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে মাওবাদী-সংক্রান্ত ঘটনার সংখ্যা ১৭ হাজার ৬৭৯ এবং মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ৯৮৪। অন্যদিকে ডেটায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল (১৫ জুন) পর্যন্ত মাওবাদী হিংসার ঘটনা ৭ হাজার ৬৪৯টি, মৃতের সংখ্যা কমে ২ হাজার ২০ জন।
শাহ-বার্তা-
পরিস্থিতির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ আনতে বিশেষ রূপরেখা বাতলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি নির্দেশ দেন, অতি বামপন্থীদের আর্থিক সহায়তা পাওয়া ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যৌথ দল গঠনের চেষ্টা করতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিকে। তাছাড়া অতি বামপন্থীদের অর্থ-সাহায্য প্রতিরোধে রাজ্যের এজেন্সিগুলির সঙ্গে একযোগে কাজ করছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সঙ্গে এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে যে, যেখানে এই সমস্যা কমে যাচ্ছে সেখান থেকে মাওবাদীরা যেন অন্য রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিতে না পারে।