কলকাতা : আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রকের। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত। নর্থ ব্লক থেকে চিঠি এসেছে। এনিয়ে আলাপনের কোনও বক্তব্য থাকলে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে। কেন তাঁর বিরুদ্ধে মেজর পেনাল্টি প্রসিডিং নয়, তা তাঁকে জানাতে হবে। এই ৩০ দিনের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সামনাসামনি গিয়েও জানাতে পারেন, কেন তাঁকে শাস্তি দেওয়া উচিত নয়। এছাড়া লিখিতভাবেও নিজের বক্তব্য জানাতে পারেন আলাপন। কিন্তু, ৩০ দিনের মধ্যে উত্তর না দিলে কমিটি যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে এগোতে পারে।


কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বিরত থাকার অভিযোগে শো-কজ করা হয়েছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৩১ মে ছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরির শেষ দিন। সেদিনই তাঁকে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিল্লি না গিয়ে সেদিনই অবসর নেন এই আমলা। রাজ্য সরকার তাঁর কর্মজীবনের মেয়াদ তিন মাস বাড়ানোর কথা জানালেও, শেষপর্যন্ত আর বাড়তি সময় চাকরি না করারই সিদ্ধান্ত নেন আলাপন । সেদিনই তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে তিন বছরের জন্য নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন ভূমিকায় দেখা যায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। 


মুখ্যসচিব থাকাকালীন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলি করেছিল কেন্দ্র। সেই নির্দেশ দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্থ কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতর। কারণ, আইএএস অফিসাররা এই দফতরের আওতায় পড়েন। যার ভিত্তি ছিল ১৯৫৪ সালের ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাক্টের ৬(১) ধারা। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসর নেওয়ার পর কর্মিবর্গ প্রশিক্ষণ দফতর আর এর মধ্যে নেই। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোকজ করে অমিত শাহর অধীনস্থ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। হাতিয়ার করা হয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫১ (বি) ধারাকে। যেখানে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার বা ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটি বা স্টেট এক্সিকিউটিভ কমিটি বা জেলা কর্তৃপক্ষ বা এদের হয়ে দেওয়া নির্দেশ, কোনও কারণ ছাড়া অমান্য করার অভিযোগে, দোষী সাব্যস্ত হলে ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা অথবা দু’টোই হতে পারে।


কেন্দ্রীয় সরকারের শো-কজের জবাব দেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আলোচনার পরে রিপোর্ট দিয়ে অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে আসি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই আমরা বেরিয়ে আসি।’ এই মর্মে কেন্দ্রীয় আন্ডার সেক্রেটারি এ কে সিংহকে চিঠি দেন তিনি। 


যদিও আলাপনের এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় কেন্দ্র। কর্মিবর্গ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে মেজর পেনাল্টি প্রসেডিং শুরু হবে। সেই পেনাল্টি প্রসেডিং কেন নেওয়া হবে না তার উত্তর ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে হবে । সামনাসামনি গিয়েও জানাতে পারেন, লিখিতভাবেও জানাতে পারেন আলাপন। আর যদি কেন্দ্রের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ না করেন, সেক্ষেত্রে নিয়মমতো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।