নয়াদিল্লি: বিশ্বব্যাপী করোনা-আতঙ্কের জেরে আধুনিক ইতিহাসে সম্ভবত প্রথমবার গুড ফ্রাইডে ও ইস্টার সানডে পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না গির্জায় প্রার্থনার পাঠ। সম্ভবত প্রথমবার ফাঁকা থাকবে ভ্যাটিকানের সন্ত ব্যাসিলিকার গির্জা, যেখানে প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক ভক্তসমাগম ঘটে।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো, ভারতেও বর্তমানে লকডাউন চলছে। এই পরিস্থিতিতে প্রার্থনা ও উপাচারের অংশটি সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ স্ট্রিমিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একাধিক গির্জার পাদ্রি ও বিশপরা। লক্ষ্য, যাতে ভক্তরা বাড়ি থেকেই ওই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করতে পারেন। লকডাউনে বাড়ি থেকে না বেরিয়েই যাবতীয় ধর্মীয় আচার সম্পন্ন করা যেতে পারে।


ভারতে প্রায় ২.৮ কোটি খ্রিষ্টান বসবাস করেন। মুম্বইয়ের আর্চবিশপ জানিয়েছেন, মানছি, এটা সকলের পক্ষে কষ্টের হবে। অনলাইন সম্প্রচার কখনই গির্জায় উপস্থিত থাকার বিকল্প হতে পারে না। কিন্তু, নিজেদের ও অন্য সকলকে সুরক্ষিত রাখাটাও জরুরি। আমরা আশা ছাড়ছি না।


একইভাবে, দিল্লি থেকে শুরু করে কর্ণাটক ও কেরলের বিভিন্ন গির্জায় অনলাইন পরিষেবার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়া, ভক্তদের জন্য থাকছে বিশেষ ফোন কলের ব্যবস্থাও। যেখানে যীশুর বাণী শোনানো হবে এবং ধর্ম সংক্রান্ত বিভিন্ন আচার ও প্রক্রিয়া বলে দেওয়া হবে। কোথাও, ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথাও বলবেন পাদ্রীরা।


বিভিন্ন রাজ্যের নিজ নিজ খ্রিষ্টান সংগঠনগুলি ধর্মাবলম্বী মানুষদের উদ্দেশে বলেছেন, তাঁরা যেন গুড ফ্রাইডে ও ইস্টারের প্রার্থনা বাড়ি থেকেই করেন। কেউ যেন বাইরে না এসে জমায়েত করেন। এই মর্মে, মানুষের কাছে সতর্কতা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন গির্জাগুলির মাধ্যমেও বার্তা পাঠানো হচ্ছে। সকলকে বলা হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখতে। সেখানে অনলাইন প্রার্থনার মাধ্যমে ধর্মীয় আচার সম্পন্ন করতে।


পাশাপাশি, লকডাউন যাতে না ভঙ্গ হয়, তার জন্য সচেষ্ট পুলিশও। বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ সংশ্লিষ্ট বড় বড় গির্জাগুলিতে গিয়ে অনুরোধ করেন যাতে গুড ফ্রাইডে ও ইস্টারের দিন যেন তা খোলা না রাখা হয়। গির্জাগুলিকে বোঝানো হয়, লকডাউন ভেঙে মানুষ জমায়েত করলেই সমূহ বিপদ। পুলিশের অনুরোধ মেনে নিয়ে গির্জাগুলি জানিয়ে দিয়েছে, লকডাউনের নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞা তারা ভঙ্গ করবে না। সেইমতো, গির্জার পাদ্রীরা মানুষকে লকডাউন মানার পরামর্শ দিয়েছেন।