কলকাতা: কারও কাজ হারানোর ভয়, কারও মুখে সংক্রমণ কমার আশা, লোকাল ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলল হাওড়া, শিয়ালদা রেল স্টেশনে।


রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। সামাল দিতে গতিবিধিতে নিয়ন্ত্রণ আনছে রাজ্য সরকার। আগামীকাল থেকেই বন্ধ লোকাল ট্রেন পরিষেবা। আর তাতেই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। হয়রানির আশঙ্কা করছেন অনেকেই। অনেকে আবার রোজগারে ক্ষতির চিন্তা করছেন। তবে, করোনা সংক্রমণ কমাতে এই সিদ্ধান্ত জরুরি বলে মত কয়েকজন যাত্রীর।


রাজ্যের একটা বড় অংশই লোকাল ট্রেনে রোজ অফিস যাতায়াত করেন। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই অসুবিধায় পড়বেন নিত্যযাত্রীরা। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বেসরকারি ক্ষেত্রে ফের ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি সরকারি ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস চালানোর কথা বলা হয়েছে। 


রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই তিনি তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। শপথ নেওয়ার পর তিনি জানিয়ে দেন, করোনা মোকাবিলাকেই তিনি সর্বাধিক প্রাধান্য দেবেন।


সেইমতো এদিন নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই জানান, আগামীকাল থেকেই বন্ধ হবে লোকাল ট্রেন। আর তাতেই সমস্যার আঁচ পাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। 


তাঁদের কথায়, হুট করে এমন সিদ্ধান্তে সমস্যা বাড়বে। অফিসযাত্রীদের অনেকেরই অভিযোগ, অফিস খোলা রয়েছে এখনও, এই অবস্থায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে স্বাভাবিকভাবেই অসুবিধায় পড়বেন তাঁরা।


পাশাপাশি যেহেতু বাস এবং মেট্রো চলাচলেও কাটছাঁট করা হচ্ছে সে ক্ষেত্রে বাসও অপ্রতুল হয়ে পড়বে কাল থেকে। এই অবস্থায় সময়মতো কীভাবে গন্তব্য পৌঁছানো সম্ভব তা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। 


হাওড়া ও শিয়ালদা হয়ে যাতায়াত করা নিত্যযাত্রীরা বলছেন, "আমাদের খুব ক্ষতি হবে। ভোগান্তি হবে। চাকরি বাঁচাতে ১০০-১৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে গতবারের মতোই বাসে যাতায়াত করতে হবে।"


কারও কথা, "কাজের জন্য ট্রেনে যাতায়াত করি। অফিস খোলা।" এই পরিস্থিতিতে আগামীকাল থেকে ট্রেন বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। যাতায়াতে হয়রানি নিয়ে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে বাড়ছে চিন্তা।


উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ বাড়তেই প্রভাব পড়েছিল ট্রেন চলাচলের ওপর। একের পর এক রেলকর্মী করোনা সংক্রমিত হওয়ায় রেলের তরফে ট্রেন চলাচলের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়। পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ওই শাখার অন্তত ১২০০ জন কর্মী। তার মধ্যে শিয়ালদা ডিভিশনেই সংক্রমিত ৭৫০ জন রেলকর্মী। এর জেরে শিয়ালদা সেকশনে গত শনিবার বাতিল করা হয় ৫৪ জোড়া লোকাল ট্রেন। যদিও শুধু ট্রেন নয়, ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাস এবং মেট্রো চলাচলও। সবমিলিয়ে যাত্রী দুর্ভোগের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।