নিউ দিল্লি : করোনাকালে চিন্তা বাড়িয়েছে লকডাউন। বাইরে বেরোতে না পেরে অজান্তেই বড় সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি আমরা। প্রতিদিন রোদ গায়ে না লাগায় ভিটামিন ডি'র অভাব তৈরি হচ্ছে দেহে। চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রমণের সময় যা খুবই প্রয়োজন। কোথা থেকে পাবেন এই ভিটামিন ডি ?


কেন করোনার সময় ভিটামিন ডি আবশ্যিক ?


ভাসির হিরানন্দিনী হসপিটালের চিকিৎসক হরিশ নায়েকের মতে, কোভিড পরস্থিতিতে ভিটামিন ডি-৩ মানবদেহে খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে এই ডি-৩ কাজে লাগে। সঙ্গে হাড়কে পুষ্টি জোগায় এই ভিটামিন। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ার পাশাপাশি এই ভিটামিনের মাধ্যমে স্নায়ুর দুর্বলতাও দূর হয়।


ভিটামিন কী কাজে লাগে ?


সূ্র্যরশ্মি বা খাবারের থেকে ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি আমরা। আসলে ভিটামিন ডি একটা স্টেরয়েড হরমোন, মানবদেহে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি পড়ার পরই যা নানা বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। হাড়ের গঠন ঠিক রাখার জন্য আমাদের শরীরে ভিটামিন-ডির খুই প্রযোজন। হাড়কে ক্যালসিয়াম জোগায় এই ভিটামিন।


ভিটামিন ডি না পেলে কী ক্ষতি ?


দীর্ঘদিন ধরে শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব দেখা দিলে হাড়ের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। ডাক্তার নায়েকের মতে, শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-এর অভাবে নরম হাড় ও রিকেট রোগ দেখা দেয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শরীরে ভিটামিন ডি না গেলে অস্টিওম্যালাসিয়ার মতো রোগ হয়। যা পরে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে।


বর্তমানে ভিটামিন ডি-এর অভাবে দেশের বহু মানুষের ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, হৃদরোগ, হতাশা ও ওজন বৃদ্ধি হচ্ছে। করোনার জন্য বেশিরভাগ মানুষই এখন রাস্তায় বেরোচ্ছেন না। আইসোলেশনে থাকতে গিয়ে রোদের মুখ দেখছেন না তাঁরা। যা তাঁদের মারাত্মক ক্ষতি করে দিচ্ছে। বহু রোগীর ক্ষেত্রে এই সময়ে হতাশা, স্নায়বিক দুর্বলতার মতো রোগ দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর মূল কারণ ভিটামিন ডি-এর অভাব।


প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি না থাকার উপসর্গ


বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অল্প পরিশ্রমেই হাঁফিয়ে উঠছেন প্রাপ্তবয়স্করা। হাড় ও মাংসপেশিতে প্রায়ই ব্যথা হচ্ছে। সব সময় শরীর ভালো নেই মনে হচ্ছে অনেকেরই। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে বা মাটিতে বসলেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে ? তাহলেই বুঝবেন ভিটামিন ডি-র অভাব হচ্ছে আপনার।


কোন খাবারে পাবেন ভিটামিন ডি ?


দুধ, ডিমের কুসুম, দই, কমালালেবুর রস, কড লিভার অয়েল, মাছ থেকে পাওয়া যায় এই ভিটামিন ডি। এর বাইরে সূর্যের আলো থেকেও এই ভিটামিন পাওয়া যায়। ডাক্তাররা বলছেন, মহিলা ও প্রবীণ নাগরিকদের সময়ে সময়ে বোন ডেনসিটি টেস্ট ও ব্লাড পরীক্ষার মাধ্যমে ভিটামিন ডি গ্রাফ সম্পর্কে জানা উচিত।