কলকাতা: নারদ-মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন মিলেছে দুদিন আগে। আজ এসএসকেএম থেকে ছুটি পেলেন মদন মিত্র। আর ছুটি পেয়েই সুস্থতা উদযাপন করলেন সুরে সুরে। গাইলেন একের পর এক গান। "আজই বসন্ত জাগ্রত দ্বারে'' থেকে "এত কাছে রয়েছ তুমি''। হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে বললেন, মদন মিত্র মুক্ত। 


শুধু সুস্থতা উদযাপনই নয়, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরেও সুরকেই হাতিয়ার করলেন কামারহাটির বিধায়ক। হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মদনকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, আমি একজন প্রাক্তনকে চিনি সেটা প্রসেনজিৎ। একটা ভাল সিনেমা করেছিল, তার গানটা হল, “এত কাছে রয়েছ তুমি...তুমি ছাড়া এমন আপন আমার যে আর কেউ নাই।’’ আমি আর কোনও প্রাক্তনকে চিনি না। একইসঙ্গে তিনি বলেন, আমার কোনও প্রাক্তন দল নেই। কোনও প্রাক্তন ঝান্ডা নেই।  নিজেকে অনুগত বলেও ব্যাখ্যা করেন মদন মিত্র। শোলে ছবির বিখ্যাত সংলাপ “ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর” টেনে তিনি বলেন, আমি বেইমান নই।


এদিন হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মদন মিত্র জানান, “আমি খুব খুশি, নাতির কাছে যাচ্ছি। এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। মদন মিত্র বলেন, আমি মরণাপন্ন হয়ে এসেছিলাম। ৬০-র নিচে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল। নাকে লাম্ফ আছে। করোনা পরবর্তী পর্বে হদযন্ত্রের সমস্যা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সরা সুস্থ করে তুলেছন। আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।“ রবিবার সকালে পুরোহিত এসে পৌঁছন হাসপাতালে। পুজো করে হাসপাতাল থেকে বেরোলেন কামারহাটির বিধায়ক। হাসপাতালের বাইরে প্রস্তুত হুডখোলা গাড়ি, ফুল নিয়ে নেতাকে স্বাগত জানাতে তৈরি ছিলেন তাঁর অনুগামীরা। 


এদিন তাঁর গলায় শোনা যায় “আমার সোনার হরিণ চাই“, “আমার প্রাণের মাঝে সুধা আছে চাও কী?” তিনি বলেন, আমি জগতে এসেছি মনোরঞ্জন করতে। একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট জানান, সমাজের কোনও ক্ষতি হোক চাই না।  আদালতের নির্দেশ অমান্য করব না। আমার এখন কাজ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। একইসঙ্গে কটাক্ষ করে গানের সুরে তিনি বলেন, “ও মন্ত্রী মশাই ষড়যন্ত্রী মশাই” – আমি মন্ত্রীও নই, ষড়যন্ত্রীও নই। তথাগত রায়ের মতো লাস ভেগাসের নাচ দেখি না। আমি সাধারণ মানুষ।’’ ফের ফের সুর মিলিয়ে গাইলেন “ও লাভলি।’’ সন্ন্যাসী রাজা প্রসঙ্গ টেনে মদন বলেন, “মেজো কুমার ফিরে এলে তাঁকে বলা হয়, তুমি আমাদের রাজা। তিনি বলেছিলেন আমি আর রাজা হতে চাই না। তোমরা বিশ্বাস করো আমি আরা রাজা হতে চাই না।’’ সবশেষে তিনি সুরে সুরে সবাইকে ধন্যবাদ জানালেন রবীন্দ্রনাথের সুরে, “সবারে আমি প্রণাম করে যাই।’’