কলকাতা : এবার উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রুমানা সুলতানা। গতকাল এই ফল ঘোষণার সময় বারবার রুমানার ধর্মের উল্লেখ করায় (নাম না করে) উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাসের পদত্যাগ দাবি করা হল। এর পাশাপাশি সাংবাদিক বৈঠকে প্রথম স্থানাধিকারীকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বলেও উল্লেখ করা হয়। এই ইস্যুতে মহুয়া দাসের পদত্যাগ দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গের ইমাম অ্যাসেসিয়েশন। ধর্মীয় ভেদাভেদ করার অভিযোগ উঠেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির বিরুদ্ধে। 


এব্যাপারে ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের তরফে পরোক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাঁকে(উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিকে) এই ধরনের মন্তব্য করতে অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। ওঁকে যদি এই পদ থেকে সরানো না হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে ওই একজনের অনুপ্রেরণাতেই এমনটা করা হয়েছে। তাঁকেও একই দায়িত্ব নিতে হবে।


গতকাল ফলাফল প্রকাশের সময় মহুয়া দাস বলেছিলেন, 'যিনি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, একা। এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন। কোনও র্যাঙ্ক বলছি না, সর্বোচ্চ নম্বর। সর্বোচ্চ নম্বর এককভাবে পেয়েছেন একজন মুসলিম কন্যা। মুসলিম। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে একজন মুসলিম লেডি, গার্ল। তিনি এককভাবে ৪৯৯ সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন।' আর তাঁর যে বক্তব্য নিয়েই শুরু হয় ব্যাপক জলঘোলা। ইচ্ছাকৃত ধর্ম পরিচয় দিয়ে আখেরে ছাত্রীকে তিনি হেঁয় করতে চেয়েছেন বলেও একপক্ষ অভিযোগ শানায়। দাবি করে পদত্যাগেরও।


গোটা বিতর্ক নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রধান মহুয়া দাস শুক্রবার বলেছেন, 'সংসদের ইতিহাসে প্রথমবার এরকম ভালো রেজাল্ট কেউ করেছে। ওঁর কথা বলার সময় আবেগের বশে বেগম রোকেয়ার কথা মনে করছিলাম, যিনি এরকম একইভাবে লেখাপড়ায় ভালো এবং সাধারণ ঘরানা থেকে উঠে এসেছিলেন। সেই ভিত্তিতে সাংবাদিকদের তথ্য জানানোর সময় তাদের বুঝতে সুবিধার জন্য তথ্য হিসেবে বিষয়টা উল্লেখ করেছি। মেয়েটি শিক্ষার রত্ন, তাঁর গৌরব যাতে সংসদ সবার মধ্যে ভাগ করে নিতে পারে, সেই অভিপ্রায় থেকেই ওভাবে কথাগুলো বলেছিলাম।'