কলকাতা: 'ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন' বিতর্কে নতুন মোড়। সংসদের এথিক্স কমিটির সামনে ৩১ অক্টোবর হাজিরা দিচ্ছেন না মহুয়া মৈত্র (Mohua Moitra)। এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের। 


বিতর্কে নতুন মোড়: হিরানন্দানি গ্রুপের থেকে উপহারের বিনিময়ে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে, সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ উঠেছে মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। যে অভিযোগ  তুলেছেন, তাঁরই প্রাক্তন বন্ধু অনন্ত জয় দেহাদ্রাই এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সেই হিরানন্দানি গ্রুপের সিইও দর্শন হিরানন্দানির সই সম্বলিত একটি হলফনামা সামনে এসেছে। যার পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন সাংসদ নিজেও। এই ঘটনায় অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে (Nishikant Dubey) বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দেন। ৩১ অক্টোবর তলব করা হয়েছে মহুয়া মৈত্র। কিন্তু হাজিরা দিচ্ছেন না তিনি। সংসদের এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে মহুয়া মৈত্র জানিয়েছেন, 'আমাকে গতকাল সন্ধে ৭.২০-এ ইমেল করে সমনের কথা জানানো হয়। তার আগে সংবাদমাধ্যমে সমনের কথা ঘোষণা করে দেন এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান। ৪ নভেম্বর পর্যন্ত আমার সংসদীয় এলাকায় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় দিল্লিতে থাকা সম্ভব নয়।'


সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মহুয়া মৈত্রের প্রাক্তন বন্ধু জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। তিনি মহুয়ার বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে চিঠি লেখেন। সেই চিঠির ভিত্তিতে বিজেপি সাংসদ দুবে চিঠি দেন লোকসভার স্পিকারকে। মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ খারিজ করার আবেদনও বিজেপি সাংসদ।দ্রুততার সঙ্গে স্পিকার বিষয়টি লোকসভার এথিকস কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার লোকসভার এথিকস কমিটি মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু ও বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে ডেকে পাঠিয়েছে।তার ঠিক আগে হিরানন্দানি গ্রুপের সিইও দর্শন হিরানন্দানির চাঞ্চল্য়কর বিবৃতি আগেই সামনে এনেছে সংবাদসংস্থা পিটিআই।


বিবৃতিতে দর্শন দাবি করেছেন, ২০১৭ সালে, বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের সময় তাঁর মহুয়া মৈত্রর সঙ্গে পরিচয় হয়। তখন মহুয়া বিধায়ক ছিলেন। কুকুরের মালিকানা নিয়ে যে প্রাক্তন বন্ধুর সঙ্গে মহুয়া মৈত্রর বিরোধ চলছে, কার্যত তাঁর এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগকেই মান্য়তা দিয়ে দর্শন হিরনন্দানি দাবি করেছেন, মহুয়া মৈত্র অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্খী এবং খুব দ্রুত জাতীয় স্তরে নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছিলেন। তাঁর বন্ধুরা তাঁকে পরামর্শ দেন, অল্প সময়ে নাম করতে হলে, নরেন্দ্র মোদিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করতে হবে। কিন্তু, মোদির সরকারি নীতি হোক কিংবা ব্য়ক্তিগত জীবন, এতটাই নিখুঁত এবং দাগমুক্ত যে তাঁকে আক্রমণের কোনও সুযোগই ছিল না। তাই মহুয়া মৈত্রর ধারনা হয়, নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করার একমাত্র উপায় হচ্ছে গৌতম আদানি ও তাঁর গ্রুপকে আক্রমণ করা কারণ, দু-জনই একই রাজ্য গুজরাত থেকে এসেছেন। মহুয়া আদানির বিরুদ্ধে কিছু প্রশ্ন তৈরি করেন, যে প্রশ্নগুলো তিনি সংসদে তুলবেন, যাতে আদানি গোষ্ঠীকে নিশানা করে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলা যায়। সাংসদ হিসাবে মহুয়া মৈত্রর যে ইমেল আইডি, সেটাও তিনি আমাকে পাঠান, যাতে আমি তাঁকে আরও তথ্য দিতে পারি এবং তিনি সেগুলো সংসদে তুলতে পারেন। সেই প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে যাই। এখানেই থামেননি হিরানন্দানি গ্রুপের সিইও, কার্যত স্বীকারোক্তির সুরে তিনি এই দাবিও করেছেন, যে মহুয়া মৈত্র তাঁর সংসদের পোর্টালের লগ-ইন এবং পাসওয়ার্ডও তাঁকে দিয়ে দেন, যাতে প্রয়োজন হলে, তিনি মহুয়া মৈত্রর হয়ে সরাসরি প্রশ্ন পাঠাতে পারেন।









আরও পড়ুন: North 24 Parganas Weather: কখনও মেঘ, কখনও রোদ, আজ কেমন উত্তর ২৪ পরগনার আবহাওয়া?