তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: প্রতিশ্রুতি পালন করল রাজ্য সরকার। বাম ছাত্র যুব সংগঠন গুলির ডাকে নবান্ন চলো কর্মসূচীতে গিয়ে মৃত মইদুল ইসলাম মিদ্যার স্ত্রী আলিয়া বেগমের হাতে সরকারী চাকরীর নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হলো। শুক্রবার বিকেলে মৃত ওই বাম যুব নেতার কোতুলপুরের চোরকোলা গ্রামের বাড়িতে যান বাঁকুড়ার জেলাশাসক কে.রাধিকা আইয়ার।  সেখানে মইদুলের  স্ত্রী আলিয়া বেগমের হাতে কোতুলপুর থানায় হোমগার্ড পদের নিয়োগপত্র তুলে দেন  জেলাশাসক । উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিকরা। 
  প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর বাম ছাত্র যুব সংগঠন গুলির ডাকে 'নবান্ন চলো' কর্মসূচীতে যোগ দিয়ে গুরুতর আহত হন ডিওয়াইএফআই গোপীনাথপুর অঞ্চল কমিটির সম্পাদক মইদুল আলি মিদ্যা। বামেদের অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাতে জখম হয়েছিলেন বাঁকুড়ার কোতুলপুরের গোপীনাথপুর অঞ্চল ডিওয়াইএফআই-এর ইউনিট সেক্রেটারি।  চারদিন ধরে যমে মানুষে টানাটানির পর, গত সোমবার মৃত্যু হয় লাঠির ঘায়ে গুরুতর আহত বাম যুব নেতার!
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে চিকিৎসলক তথা বাম নেতা ফুয়াদ হালিমের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।  শনিবার অবস্থার অবনতি হলে, তাঁকে ক্যামাক স্ট্রিটের এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় মইদুলের।
মইদুলের চিকিৎসক এবং সিপিএম নেতা ফুয়াদ হালিম সোমবার দাবি করেছিলেন, পুলিশের বেধড়ক মারের জেরেই কিডনিতে আঘা পান তিনি। তার জেরেই মৃত্যু হয় ডিওয়াইএফআই নেতার।
পাল্টা লালবাজার সূত্রে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, ১১ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে কেন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হল না মইদুলকে?  কেন মইদুলের আহত হয়ে ক্লিনিকে ভর্তি থাকার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি?
এরইসঙ্গে লালবাজার সূত্রে দাবি, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে,মৃত ডিওয়াইএফআই নেতার দেহের ভিতরে কোনও অঙ্গে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তবে হাঁটুতে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে।  মারধরের জেরে আঘাতের ফলে মৃত্যু হলে অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ক্ষতচিহ্ন থাকত। 
পুলিশের দাবি, মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে, ভিসেরা পরীক্ষা করা হবে। অন্য কোনও রোগ ছিল কি না, তা জানতে করা হবে হিস্টো প্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষা।
বামেদের একটাই অভিযোগ, একটা তরতাজা ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলল পুলিশ! কিন্তু, পুলিশের মারেই মৃত্যু কি না, তা নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ পুলিশমন্ত্রী! 
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, অন্য কোনও কারণ আছে কিনা... শরীরে কোনও সমস্যা ছিল কিনা দেখতে হবে... প্রয়োজন হলে বাড়ির একজনকে চাকরি  দেওয়া হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করলো রাজ্য সরকার।