নয়াদিল্লি: আগে জঙ্গলেই অবাধ বিচরণ ছিল তার। কিন্তু আচমকা মানুষখেকো হয়ে ওঠে সে। যখন তখন চড়াও হতে শুরু করে লোকালয়ে। তাতে ধরে এনে চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দি করে ফেলা হয়েছিল কিষাণকে (Tiger Kishan Dies)। কিন্তু শুধু লোহার খাঁচাই নয়, মারণ রোগও কাবু করে ফেলেছিল পুরুষ বাঘটিকে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল সে (Lucknow Zoo)।


দীর্ঘ ১৩ বছর  লড়াই ক্যান্সারের সঙ্গে, মারা গেল কিষাণ


কিষাণপুর টাইগার রিজার্ভে একসময় অবাধ বিচরণ ছিল কিষাণের। কিন্তু আচমকা লোকালয়ে তার উৎপাত বেড়ে যায়। তাতে দুধওয়া জাতীয় উদ্যানের আশাপাশের এলাকায় উৎপাত বাড়ে তার। তাই তাকে ধরতে শুরু হয় উদ্যম। ২০০৮ সালে জাল পাতা হলেও, ২০০৯ সালের ১ মার্চ কিষাণকে ধরা সম্ভব হয়। তার এনে রাখা হয় লখনউ চিড়িয়াখানায়।


প্রাথমিক পর্যায়েই কিষাণের ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। তাতে দেখা যায়, কিষাণের হেমাঞ্জিওসারকোমা (ম্যালিগন্যান্ট টিউমার) রয়েছে, যা তার কান এবং মুখেও ছড়িয়ে পড়েছে। চিকিৎসকরা সেই সময় জানান, রোগের কারণেই কিষাণ শিকার করার ক্ষমতা হারিয়েছে কিষাণ।  বন্য প্রাণীদের পিছনে ছুটে বেড়ানোর ক্ষমতা নেই তার। তাতেই মানুষখেকো হয়ে উঠেছে।


আরও পড়ুন: Delhi Air Pollution: দূষণ দমবন্ধ দিল্লির, ওয়র্ক ফ্রম হোমে জোর সরকারের, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের ভাবনা


এর পর চিড়িয়াখানাতেই কিষাণের চিকিৎসা শুরু হয়। সারা ক্ষণ তার দেখভাল করতেন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। ভিতরে ভিতরে রোগ কুরে খাচ্ছিল তাকে। বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যেত না বটে, কিন্তু ক্রমশ বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছিল সে। তার পরও দীর্ঘ ১৩ বছর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে যায়।  মৃত্যুর আগে কিষাণ ঠিক মতো খেতেও পারত না বলে জানিয়েছেব চিড়িয়াখানার কর্মীরা। জানা গিয়েছে, এমন দিনও গিয়েছে মুখে দানাও তোলেনি সে। সারাদিন বসে থেকেছে একই জায়গায়। শেষ মেশ শুক্রবার সকালে মারা যায় সে।


চিড়িয়াখানার এক বাঘিনীও গুরুতর অসুস্থ


চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর ভিকে মিশ্র জানিয়েছেন, কিষাণের মৃত্যুতে চিড়িয়াখানার কর্মীরা কষ্ট পেয়েছেন। অত্যন্ত সমাদরে তাকে সমাধিস্থ করেন সকলে মিলে। কিষাণের চলে যাওয়ায় যেমন মন খারাপ সকলের, তেমনই চিড়িয়াখানার বাঘিনী কাজরীকে নিয়েও উদ্বিগ্ন সকলে। বয়স হয়েছে কাজরীর। খাবার খেলেও নড়াচড়া কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই ঠান্ডায় তার জন্য হিটারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।