নয়াদিল্লি: সূর্য উঠলেও কাটছে না আঁধার। ধোঁয়াশা জ্বালা ধরাচ্ছে চোখে। চারপাশ দেখাই যাচ্ছে না ভাল করে। দূষণের গ্রাসে কার্যতই তিমিরে রাজধানী (Delhi Air Pollution)। এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের বাড়ি থেকেই কাজ সারার পরামর্শ দিল দিল্লি সরকার। দূষণের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে অফিস যাওয়ার তুলনায় ওয়র্ক ফ্রম হোম নিরাপদ বলে জানানো হল।
দিল্লিতে দৃষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় সরকারের
দিল্লিতে বাতাসের গুণমান যে পর্যায়ে রয়েছে (Air Quality Index), তাতে আপাতত অত্যাবশ্যক নির্মাণকার্য ছাড়া বাকি সমস্ত রকম নির্মাণ, বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ কমিটি (Delhi Pollution)। নিতান্ত বাড়ি থেকে বেরোতেই হলে, আলাদা আলাদা গাড়িতে যাত্রার পরিবর্তে কারপুল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে দিল্লি সরকারও।
শুক্রবার দিল্লির বাতাসের গুণমান ছিল ৩৯৯। বাতাসের গুণমান ২০১ থেকে ৩০০-র মধ্যে থাকলে তাকে ক্ষতিকর বলে ধরা হয়। ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে বাতাসের গুণমান থাকলে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ৪০১ থেকে ৫০০-র মধ্যে থাকলে পরিস্থিতি গুরুতর বলে ধরা হয়।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের বাতাসের গুণমান বিবেচনাকারী কমিটির বৈঠকে বলা হয়, আগামী কয়েক দিনে দিল্লির বাতাসের গুণমান আরও নিচে নামবে। রবিবার পর্যন্ত অন্তত পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনকই থাকবে। তার পরও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দিল্লিতে ট্রাক ঢোকা বন্ধ করা হতে পারে। স্কুলও সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার। এমনকি জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে নামতে দেওয়া হতে পারে গাড়ি।
শনিবার এ নিয়ে বৈঠক রয়েছে দিল্লি সরকারেরও। সেখানে পেট্রোল এবং ডিজেল চালিত গাড়িগুলির নির্গমনের পরিমাণ বিচার করে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবা হতে পারে।
এর আগে, বুধবার কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে কারখানায় ব্যবহৃত কয়লা সমেত ক্ষতিকর জ্বালানির ব্যবহারে রাশ টানার কথা বলা হয়। তা মানলে ১ জানুয়ারি থেকে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশই জরিমানাও করা হতে বলে দেওয়া হয় হুঁশিয়ারি।
আগামী কয়েক দিন দিল্লির পরিস্থিতি উদ্বেগজনকই থাকার ইঙ্গিত
দিল্লির বায় দূষণের জন্য পড়শি রাজ্যে ফসলের গোড়া পোড়ানোকে দায়ী করা হয়। যদিও এ বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পঞ্জাবে ফসলের গোড়া পোড়ানো ৩০ শতাংশ এবং হরিয়ানায় ৪৮ শতাংশ হ্রাস পায়। তবে যমুনায় দৃষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ গত পাঁচ বছরে উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি রিপোর্টে। ২০২৫ সালের মধ্যে যমুনায় সাফাই চালিয়ে নদীর জলকে স্নানযোগ্য করে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে দিল্লি সরকারও।