লন্ডন: রক্তে সংক্রমণের জেরে যৌনাঙ্গ খোওয়ান ইংল্যান্ডের এক বাসিন্দা। তিনিই বিশ্বে প্রথম মানুষ, নতুন করে যাঁর যৌনাঙ্গ গঠন করে দেওয়া হয়েছে বাহুতে। ৪ বছর ধরে চলছে এই প্রক্রিয়া, নানা কারণে এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।

ওই ব্যক্তির নাম ম্যালকম ম্যাকডোনাল্ড, পেশায় মেকানিক। ২০১৪ সালে তাঁর পেরিনিয়ামে একটি সংক্রমণ হয়। তারপর দেখা দেয় সেপসিস। তাঁর হাত পায়ের আঙুল, যৌনাঙ্গ কালো হয়ে যায়। এক সময় এই সংক্রমণ এত সাংঘাতিক চেহারা নেয় যে যৌনাঙ্গ কেটে বাদ দিতে হয় তাঁর। অবসাদে নেশা করতে শুরু করেন ম্যালকম, লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দেন। তিনি বলেছেন, ২ বছর ধরে তাঁর পিছন পিছন ঘুরতে থাকে এক পুরুষের ছায়া।

এই সময় লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডেভিড র‍্যালফ ম্যালকমকে এক যৌনাঙ্গ বিশেষজ্ঞের সন্ধান দেন, যৌনাঙ্গ ছাড়া জন্মানো এক ব্যক্তির বায়োনিক পেনিস তৈরি করে দেন তিনি। র‍্যালফই তাঁকে জানান, তাঁর বাহুতে একটি যৌনাঙ্গ তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। এ জন্য সময় লাগতে পারে ২ বছর। ৪৫ বছরের ম্যালকম তখনই রাজি হয়ে যান, ঠিক করেন, সার্জারি করিয়ে যৌনাঙ্গ গঠন করে নেবেন তিনি।

এ জন্য ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস তাঁকে ৫০,০০০ পাউন্ড অর্থসাহায্য দেয়। কিন্তু করোনা লকডাউনের জেরে সার্জারির দিন অনিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু অবশেষে হয়েছে সার্জারি, ম্যালকম জানিয়েছেন, সমস্ত বড়দিনের আনন্দ এক সঙ্গে পেয়েছেন তিনি। প্রথমবার নিজের বাহুতে যৌনাঙ্গ দেখে ভীষণ গর্বিত হন ম্যালকম। এত কষ্টে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, যে শেষে তাঁর একটুও অদ্ভুত লাগেনি, শরীরের অংশ হয়ে গিয়েছে। সার্জনরা ম্যালকমের রক্তনালী ও স্নায়ুর অংশ নিয়ে তাঁর যৌনাঙ্গ গঠন করে দেন। ত্বক নেওয়া হয় ডান হাত থেকে। তৈরি করা হয় মূত্রনালী, হ্যান্ড পাম্পের সঙ্গে বসানো হয় দুটি টিউবও।

৪ বছর আগে এই প্রক্রিয়া শুরু হলেও নানা কারণে এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। কখনও ম্যালকম অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করেছেন, কখনও বা ডেটের সমস্যা হয়েছে। আর এখন তো করোনা অতিমারী। ম্যালকমের আশা, এ বছরের শেষেই বাহুর ওই যৌনাঙ্গ শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় বসানো যাবে।