ফরিদাবাদ: সাংসারিক অশান্তি থেকে মর্মান্তিক ঘটনা ফরিদাবাদে। চার সন্তানকে নিয়ে রেললাইনে উঠলেন এক ব্যক্তি। ছেলেরে হাত ছাড়িয়ে পালাতে চাইলেও, যেতে দিলেন না। শক্ত হাতে ধরে রাখলেন। আর তাতেই মর্মান্তিক পরিণতি হল সকলের। দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা ট্রেন চাপা দিল সকলকে। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত স্থানীয়রা। (Faridabad Case)
হরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। যে ব্যক্তি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তাঁর নাম মনোজ মাহাত। আদপে বিহারের বাসিন্দা তিনি। জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়শই অশান্তি লেগে থাকত তাঁর। মঙ্গলবারও এদকফা ঝগড়া হয় তাঁদের মধ্যে। এর পর চার সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন মনোজ। (Faridabad News)
নিজের চার ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ৪৫ বছর বয়সি মনোজ। ছেলেরা সকলেই নাবালক ছিল— ১০ বছর বয়সি পবন, ন’বছর বয়সি কারু, পাঁচ বছর বয়সি মুরলি এবং তিন বছর বয়সি ছোটু। ছেলেদের নিয়ে পার্কে যাচ্ছেন বলে বেরিয়েছিলেন মনোজ। কিন্তু পার্কে না গিয়ে সোজা রেললাইনের কাছে নিয়ে যান ছেলেদের। রাস্তায় ছেলেদের চিপসের প্যাকেট এবং সফ্টড্রিঙ্কও কিনে দেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলেদের নিয়ে প্রথমে একটি ফ্লাইওভারের নীচে প্রায় একঘম্টা সময় কাটান মনোজ। এর পর ধীরে ধীরে এগোন রেললাইনের দিকে। ট্রেন আসছে দেখে সরাসরি রেললাইনের মাঝে গিয়ে দাঁড়ান মনোজ। শক্ত করে চার ছেলের হাত ধরে রাখেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রেন তখন কাছাকাছি এসে গিয়েছে। দুরন্ত গতিতে ট্রেনটিকে ছুটে আসতে দেখে ছেলেরা চিৎকার করতে থাকে। বাবার হাত ছাড়িয়ে পালানোর চেষ্টাও করে। কিন্তু কাউকে হাত ফস্কে পালাতে দেননি মনোজ। সেই অবস্থায় কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা গোল্ডেন টেম্পল এক্সপ্রেস বাবা ও চার ছেলেকে চাপা দিয়ে দেয়।
দুপুর ১২টা বেজে ৫৫ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুই ছেলেরে বসেছিল মনোজের কাঁধে। অন্য দু’জনের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন তিনি। ট্রেনের চালক বার বার সতর্ক করলেও, কোনও পরোয়া করেননি তিনি। কাঠ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রেললাইনের মাঝে। চোখের সামনে ওই মর্মান্তিক ঘটনা দেখে স্থানীয়রাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মনোজের পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে, যাতে স্ত্রীর নাম লেখা ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রী প্রিয়া পরকীয়ায় লিপ্ত বলে সন্দেহ করতেন মনোজ। সেই নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায়শই অশান্তি হতো। মঙ্গলবারও অশান্তি হয় তাঁদের মধ্যে। এর পরই ছেলেদের নিয়ে বেরিয়ে আসেন মনোজ। প্রিয়াকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে পুলিশ। চার সন্তান ও স্বামীর পরিণতি দেখে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। পরে ধাতস্থ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।